বাগেরহাট আড়াই বছর বয়সী বাক প্রতিবন্ধী একটি ছেলে শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২০ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট শহরের দক্ষিন হাড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সরকারি শিশু পরিবারে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সকালে বোরকা পরিহিত এক নারী শিশুটিকে সাবেক পৌল কাউন্সিলর অহিদুজ্জামানের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে অহিদুজ্জামানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম যুবরাজ শিশুটিকে স্কুলের গেটে রেখে আসেন।
হাড়িখালী গ্রামের মাহমুদা বেগম বলেন, বেলা ১১টার কিছু পরে স্কুলের সামনে দেখি কোন অভিভাবক ছাড়া একটি শিশু হাটাহাটি করছে। আমি কাছে যেতেই আমার কোলে উঠে। এরপর থেকে আর নামছে না। পরে আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানাই।
মনিরা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, সকালে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দেখি কালো বোরকা পরিহিত মধ্য বয়সী এক নারী একটি শিশুকে কোল থেকে রাস্তার উপর নামিয়ে জোড় পায়ে হেটে গেল। শিশুকে রেখে কেন চলে যাচ্ছেন জানতে চাইলে, কোন কথা না বলে দ্রুত সে চলে যায়। পরে জানতে পারি শিশুটি হেটে সাবেক কাউন্সিলর অহিদের বাড়িতে গেছে।
সাবেক পৌর কাউন্সিলর অহিদুজ্জামানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম যুবরাজ নামের এক কিশোর বলেন, ১১টার দিকে বাড়ি এসে দেখি ঘরের সামনে একটি শিশু বাবার মোটরসাইকেল ধরে খেলছে। কিন্তু এই শিশুকে আমরা কেউ চিনি না। স্কুলের কোন অভিভাবকের সন্তান ভেবে শিশুটিকে স্কুলের গেটে দিয়ে যাই আমরা।
দক্ষিন হাড়িখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আছাদুজ্জামান বলেন, বাক প্রতিবন্ধী শিশুটিকে স্থানীয় এক নারী আমাদের এখানে নিয়ে আসেন। ছেলে শিশুটির স্বাস্থ্য ভাল, তবে কোন কথা বলতে পারে না। হাটা-হাটি করতে চায় না, মানুষের কোলে থাকতে ভালবাসে। আমরা বাগেরহাট সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ শিশুটিকে নিয়ে গেছেন।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছি। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে শিশুটিকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর, বাগেরহাটের প্রবেশন অফিসার মোঃ সোহেল পারভেজ বলেন, শিশুটিকে আপতত শহরের দশানীস্থ সরকারি শিশু পরিবারে রাখা হয়েছে। শিশুটি সুস্থ্য রয়েছে। শিশু পরিবারেই তার সেবা যত্ন করা হবে। শিশুটির পরিবারকে খুজে পেতে, আমাদের সকল অফিসে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্টকরাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা অবুঝ শিশুটির পরিবারের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএ