যশোরের মণিরামপুরে যুবলীগ ক্যাডার নয়ন আচার্য্যরে নেতৃত্বে জমি দখল করতে ভাড়া করা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় নারী-পুরুষসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়ন আচার্য্যসহ ৭ জনকে আটক করার পাশাপাশি হাতুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এসময় নয়নের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১’শ গ্রাম গাঁজা। সন্ত্রাসীদের জমি দখলে বাঁধা দেয়ায় এ হামলা চালানো হয়। আহতদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে মারাত্মক জখম হয়েছেন সুভাষ আচার্য্য (৫০), প্রশান্ত আচার্য্য (৪৮), নিন্দ আচার্য্য (৫২), মৃণাল আচার্য্য (৪৭) ও স্বর্ণা আচার্য্য (২০)। বুধবার সকালে উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত প্রশান্ত আচার্য্য জানান, বছর খানেক আগে তার বড় ভাই সুভাষ আচার্য্যের তার কাকাতো ভাই চিত্ত আচার্য্যের নিকট থেকে ১১ শতক জমি নায্যমূল্যে ক্রয় করেন। ইতিপূর্বে ওই জমি চিত্ত আচার্য্য তার আপন ছোট ভাই সত্য আচার্য্য’র নিকট থেকে বিক্রি বাবদ বায়নাপত্র করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরেও সত্য আচার্য্য জমির মূল্যে পরিশোধ পূর্বক জমি দলিল করতে ব্যর্থ হন। যে কারনে পরবর্তিতে চিত্ত আচার্য্য ওই জমি তার বড় ভাই সুভাষের কাছে নায্যমূল্যে দলিল করে দেন।
জমি কেনার পর দখলে যেতে না পেরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ করেন সুভাষ। স্থানীয় চেয়ারম্যান গাজী মাযহারুল আনোয়ার স্থানীয় গণ্যমান্য বক্তিবর্গের উপস্থিতিতে কয়েক দফা শালিসী সভা করেন। এরই অংশ হিসেবে ক্রয়সূত্রে জমির মালিক সুভাষ আচার্য্যকে জমির দখল বুঝে দেয়া হয়। কিন্তু সত্য আচার্য্য গংরা চেয়ারম্যানের ওই শালিস না মেনে গতকাল বুধবার সকালে ওই জমিতে সত্য আচার্য্যরে ভাইপো যুবলীগ ক্যাডার নয়ন আচার্যের নেতৃত্বে হাতুড়ি ও ধারালো দাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে জমি দখল করতে যায়।
এসময় সুভাষ পক্ষের লোকজন বাঁধা দিলে তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। মুহুর্তের মধ্যে হামলার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী নয়ন আচার্য্য’র বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়। এক পর্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়ন আচার্য্য’র বাড়িতে তল্লাসী চালিয়ে হাতুড়িসহ হামলায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এসময় পুলিশ জমি দখলে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে নয়ন আচার্য্য, সত্য আচার্য্য, উত্তম, জীবন কৃষ্ণ, আকাশ, পবিত্র ব্যানার্জী ও পাপন আচার্য্যকে আটক করে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জমি দখলে হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
খুলনা গেজেট/এনএম