মণিরামপুরে ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টুর বিরুদ্ধে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীন গভীর নলকূপ স্থাপনে জনগণের কাছ থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ (সহায়ক চাঁদা) পকেটবন্দী করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অংশের উক্ত অর্থ আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নোটিশ জারি করলেও চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু কর্ণপাত করেননি। সংগৃহীত অর্থ জমা না দেয়ায় ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে মণিরামপুর উপজেলায় ৫শ’৯৭ টি গভীর নলকূপ স্থাপনের বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন ৫০টি গভীর নলকূপের বরাদ্দ পায়। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি নলকূপের অনুকূলে ৭ হাজার টাকা (সহায়ক চাঁদা) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে জমা দেয়ার কথা। যা গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ আদায় করেছে। সে মোতাবেক সংশ্লিষ্ট অফিসে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়ার কথা থাকলেও নলকূপ স্থাপনের শুরুতেই ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা দেন। বাকী টাকা কয়েকদিন পরে জমা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু সময়মত টাকা জমা না দেয়ায় নলকূপ স্থাপনের কাজ বন্ধ করা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান বাকি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার চেক সোনালী ব্যাংক, রাজগঞ্জ শাখার অনুকূলে পরিশোধ করেন। যার চেক নং-গথ/১০ নং-০৪০১৪১৫।
কিন্তু টাকা সংগ্রহ করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই চেকের অনুকূলে টাকা নেই বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি অফিস কর্তৃপক্ষ ইউপি চেয়ারমানকে অবগত করলে তিনি এলজিইডি অফিসের পাওনা বিল উত্তোলন করে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। এক পর্যায় উপজেলা প্রকৌশলী অফিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারে সে বিলও উত্তোলন করে নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এভাবেই সরকারি অর্থ জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান এক বছর ধরে টালবাহানা করে চলেছেন বলে অভিযোগ।
এদিকে, উক্ত অর্থ পরিশোধে ৩ কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দিয়ে গত ১৭ নভেম্বর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করা হয় ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টুকে, যার স্মারক নং-৪৬.০৩.৪১৬১.৩০১.১৬.৩৩.১৫-১৯৬।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত বলেন, সরকারি অর্থ জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান যা করছেন তা সরকারি কাজ বাস্তবায়নে বাঁধা দেয়ার শামিল। যে কারণে অতি দ্রুত ইউপি ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারি অর্থ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা না দেয়ায় নোটিশ প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু নোটিশের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তার কাছে পাওনা অর্থ আগামী মঙ্গলবার জমা দেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন