সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের জিরো পয়েন্টে ভারতীয় আমদানীজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার(১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে এই চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়।
এসময় চাঁদা আদায় কাজে নিয়োজিত সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের এক কর্মচারীর কাছ থেকে কিছু ভারতীয় রূপি উদ্ধার করা হয়। গত বছর জুন মাস থেকে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নামে ট্রাক প্রতি দুইশো রুপি হারে চাঁদা আদায় শুরু হয়।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চালের সম্ভাবনাময় ভোমরা স্থল বন্দরে বিভিন্ন খাতে চাঁদাবাজির বিষয়টি ওপেন সিক্রেট ছিল। কিন্তু গত গত বছর ৩০ মে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের স্মারক নং সম্বলিত চিঠি দিয়ে ভারতীয় আমদানীজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে দুইশো রুপি হারে চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এধরনের চাঁদাবাজীর প্রতিবাদে ভোমরার এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট এসোসিয়েশন সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করে। গতবছর ২১ জুন তারিখ থেকে বন্দরের জিরো পয়েন্টে বসে ভারতীয় ট্রাক থেকে দুইশো রুপি হারে চাঁদা আদায় শুরু করলে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভাররা প্রায় ৩ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করলে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম ব্যহত হয়।
একপর্যায়ে আমদানীকারকরা ট্রাক প্রতি দুইশো রুপি হারে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় ঘোজাডাঙ্গা বসিরহাট ট্রান্সপোর্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সে দেশের বিভিন্ন দপ্তরে ভোমরা স্থল বন্দরে চাঁদাবাজির বিষয়টি উল্লেখ করে অভিযোগ দাখিল করে। ভোমরাস্থ আমদানী-রপ্তানিকারক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে সাতক্ষীরা সদর আসনের নবাগত সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু ভোমরা স্থল বন্দরের অনিয়ম, দূর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জঞ্জালমুক্ত করার ঘোষণা দিলে সাধারন ব্যবসায়ীরা কিছুটা মনোবল ফিরে পায়। যার ফলশ্রুতিতে বুধবার বিকালে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম, ওহিদুল ইসলাম, সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সাবেক সহ-সভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে সাধারন ব্যবসায়ীরা বন্দরের জিরো পয়েন্টে গিয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কর্মচারীকে চাঁদা আদায় করতে নিষেধ করেন। কিছু সময় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করে চলে আসেন।
প্রসঙ্গত: ট্রাক প্রতি দুইশো রুপি হারে প্রতিদিন প্রায় দুইশো আমদানিজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের মোট পরিমান দাঁড়ায় ৪০ হাজার রুপি। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা ভারতীয় ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করা হলেও এই অর্থ কোথায় যায় তা কেউ জানে না। অভিযোগ ওঠে ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক এই বিপুল পরিমান টাকা চাঁদাবাজি করে তা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ব্যাপারে সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দেলোয়ার রাজু জানান, সংগঠনের সিন্ধান্ত অনুযায়ী ভারতীয় ট্রাকপ্রতি কিছু টাকা তোলা হতো। তবে সেই টাকা কেউ আত্মসাৎ করেননি।
খুলনা গেজেট/ টিএ