খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

ভেঙে যাচ্ছে দেবহাটার ইছামতি নদীর ভাতশালা এলাকা

দেবহাটা প্রতিনিধি

বাংলা সীমাবর্তী বয়ে চলা ইছামতি নদীর ভাতশালা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙনের উপক্রম হয়েছে। ক্রমশ ভাংতে ভাংতে নদীর বাধ শেষ হতে বাকি আছে মাত্র কয়েক কয়েক ফুট। যে কোন সময় ভেঙে গোটা এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংঙ্কা বিরাজ করছে। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হলে লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, দেবহাটার ইছামতি নদীর ভাতশালার বিশ্বাস বাড়ি এলাকার বেড়িবাঁধটি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ ভাঙতে ভাঙতে বেড়িবাঁধের এক-তৃতীংশ ভেঙে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। একাধীক বার সংস্কার কাজে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা কাজে আসেনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে মূর্হুত্বে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংঙ্খা রয়েছে। প্লাবিত হলে লোনা পানি ঢুকে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল ও মৎসঘের ভেসে যাওয়া সহ শত শত পরিবার পানি বন্দি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বর্তমানে উক্ত এলাকার মানুষের দিন কাটছে আতঙ্কে। তবে স্থানীয়রা নদীর মুল বেড়ি ছিদ্র করে পানি উত্তোলন ও নদীতে ঠেলা জাল নদী ভাঙনের প্রধান কারণ হিসাবে দায়ী করছেন।

স্থানীয় এবাদুল ইসলাম জানায়, ভাতশালা বিশ্বাস বাড়ি সংলগ্ন বেড়িবাঁধটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা যে কোন সময় ভেঙে যেতে পারে। কয়েকমাস আগে ভেড়িবাঁধের ভাঙন প্রতিরোধের জন্য সরকারি ভাবে বালুর বস্তা স্থাপন করার কথা থাকলেও তা সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়নি। আমরা ভয়ে আছি জোয়ারের পানির চাপে যদি বাঁধ ভেঙে যায় আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো। আমাদের ক্ষতির শেষ থাকবে না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল জানান, ভাতশালা এলাকায় নদী ভাঙন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আশি করি ভাঙন ঠেকানোর জন্য কাজ শুরু হবে।

এদিকে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সালাউদ্দীন শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রæত কাজের আশ্বাস দেন। তিনি জানান, এই বাঁধটি আমরা বার বার সংস্কার করে রাখতে পারছি না। এখানে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার বিকল্প নেই। আপাতত পাইলিং করে বস্তা ও মাটি ভরাট দিয়ে কোন রকম বাঁধ রক্ষার কাজ আগামী শনিবার থেকে শুরু হবে।
অপরদিকে, ভাতশালা এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ঢাকাস্থ দেবহাটা উপজেলা সমিতির তাহাজ্জত হোসেন হিরু, খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে গত (২২ আগস্ট) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে স্বাক্ষাত করেন। পরে বাঁধ রক্ষায় তাৎক্ষণিক বাঁধ রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এছাড়া ওই স্থানটিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করেছে বলে জানা গেছে।

দেবহাটার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শনে ইউএনও
দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকালে উপজেলার ভাতশালা ও কোমরপুর এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। টানা বৃষ্টিতে সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর ভাতশালা এলাকায় দূর্বল বেড়িবাঁধ ভাঙে প্লাবিক হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময় নদী ভাঙন হয়ে প্লাবিত হওয়ার আশংঙ্কা বিরাজ করায় ওই এলাকা পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল, ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, ইউপি সদস্য ফরহাদ হোসেন হিরা সহ স্থানীয় সাধারণ মানুষ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, নদীর বাঁধ রক্ষায় শনিবার থেকে কাজ শুরু হবে। যাতে করে নদী পাড়ের মানুষের জানমালের ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। সেই সাথে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের সচেতন করা হচ্ছে। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে যাতে ক্ষতির মানুষমুখে না পড়ে সে বিষয়টি সামনে রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

 

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!