খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভূমিহীন জনপদের জমির মালিকানা দাবি; রিভিউ পিটিশন খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিষাখালির এক হাজার ৩১৮ বিঘা জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এপিলড ডিভিশনের রায় এর বিরুদ্ধ মালিকপক্ষ দাবিদারদের রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট এর ১নং আপিল বিভাগে রিভিউকারি আনছার আলীদের পক্ষের আইনজীবী মধু মালতী চধুরী বড়ুয়া ও জসীমউদ্দিনের পক্ষ অ্যাড. অন রকর্ড নুরুল ইসলাম চৌধুরীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সাল খলিষাখালির ১৩১৮ বিঘা জমি খাস করা সম্পর্কিত পারুলিয়ার জসীমউদ্দিনের দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরা যুগ্ম জলা জজ-২য় আদালত এর বিচারক এএসএম মাহাবুবর রহমান ওই জমি লাওয়ারিশ জমি হিসব ঘাষণা করে খাস সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করে দেখভাল করার জন্য ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি ভূমি সচীব ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ক নির্দেশ দেন।

একই আদেশে ওই জমি অ্যাড. কুন্ডু বিকাশ চৌধুরীসহ দুইজনকে রিসিভার নিয়াগের নির্দেশ দেন। বিচারক রায় পর্যালাচনায় বলা হয় য, ওই জমি নিয়ে জমির মালিক দাবিদারগণ যে বিনিময় দলিল দাখিল করেছেন তার ৬০, ৬১ ও ৬২ নং পাতার হাতের লেখার সঙ্গে অন্য পাতাগুলোর হাতের লেখার কোন মিল নেই।

এছাড়া কয়েকজন মালিক দাবিদার আদালতে বয়নামার ফটোকপি জমা দিয়েছেন কিন্তু মূল বয়নামা জমা দেননি। এমনকি সরকারি রাস্তা, খাল ও কালভার্টের ৫২ বিঘা জমি এসএ রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। এ তিনটি কারণ উল্লেখ করেই ওই জমি জাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ আদেশের বিরুদ্ধে মালিক দাবিদাররা জজ কার্টে আপিল করে হেরে গেছেন। পরে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হেরে যান তারা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় ওই জমি সাতক্ষীরা জলা প্রশাসককে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেখভাল করার নির্দেশ দেন। ওই রায় পাওয়ার পর সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জিপি অ্যাড. লুৎফর রহমান ২০২১ সাল কথিত জমির মালিক আনছার আলী. ডাঃ নজরুল ইসলাম, কাজী গালাম ওয়ারশ, ইকবাল মাসুদ, আনছার আলী, আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন ১৩১৮ বিঘা জমি নিজেরা দখল রেখে বা অন্যত্র লিজ দিয়ে ১৯৫৫ সাল থক ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৫০ কোটিরও বেশি সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেন। জমির মালিকরা অবস্থাবেগতিক বুঝে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সিভিল রিভিউ ১৬৮/২১ নং মামলা দায়ের করেন।

সিভিল রিভিউ পিটিশন ১৬৮/২১ আদালতে খারিজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কার্টর ১নং আপিল বিভাগর অ্যাডভাকট অন রকর্ড এমডি. নুরুল ইসলাম চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, খলিষাখালিত মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে থাকা ১৩১৮ বিঘা জমিতে ২০২১ সালর ১০ সেপ্টেম্বর সাপমারা খালের দু’পাশের ভূমিহীনসহ এক হাজারর বেশি পরিবার বসবাস শুরু করে। এরপর থক ওই জমির মালিক দাবিদাররা ভূমিহীনদের নাম থানায় একের পর এক ফৌজদারি মামলা দেন। ওই জমি খাস জমি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবিতে খলিষাখালি শেখ মুজিবনগর ভূমিহীন আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, অ্যাড, ফাহিমুল হক কিসলু, প্রভাষক ইদ্রিস আলী, সিপিবি নতা আবুল হোসনসহ বিভিন্ন বামপন্থী নেতাগণ আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেন। ২০২১ সালর ২৯ নভম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এক জরুরী সভায় সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার মাঃ মোস্তাফিজুর রহমান খলিষাখালির ৪৩৯ দশমিক ২০ একর জমি নিয়ে পারুলিয়ার জসীমউদ্দিনের এসএ রকর্ড সংশোধন ও খাস জমি হিসেবে পরিণত করার দঃ ১৮/১০ নং টাইটশুটের মামলায় সাতক্ষীরার যুগ্ম জলা জজ আদালত-২ এর বিচারক এসএম মাহাবুবর রহমান এর রায়টি উল্লেখ করেন।

জমির মালিক দাবিদাররা সুপ্রিম কোর্টের সিভিল রিভিউ মামলাটি শুনানী না হওয়া পর্যন্তা তাদের জমিতে কোন স্বত্ব নেই দাবি করে সেখানে বসবাসরত আট শতাধিক ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করা যাবে না মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন পুলিশ সুপার। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বদলী হলে নতুন পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান ও দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শখ ওবায়দুল্লাহকে ম্যানেজ করে ভূমিহীন, ভূমিহীন নেতা ও তাদপর পক্ষ অবস্থান নেওয়া সাংবাদিক, রাজনীতিবীদদের শায়েস্তা করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেন ওইসব জমির মালিক দাবিদারগণ। এমনকি দুটি এনজিও ও দুটি স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদককে ম্যানেজ করে তাদেরকে দিয়ে একের পর এক বিকৃত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কমপক্ষে দুই ডজন ভূমিহীন ও ভূমিহীন নেতাসহ সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!