খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মইনুল ইসলাম বিমানবন্দরে আটক; স্ত্রী সহ কানাডার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি
  ব্যক্তিগত আয়কর দেয়ার সময় বাড়লো ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি : এনবিআর

ভুমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও মারপিটের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের চিহ্নিত প্রভাবশালী ভূমিদস্যু জাকির ও মান্নান মেম্বরের নেতৃত্বে সরকারি খাস জমিতে বসবাসকারী ৭টি অসহায় ভুমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাট এবং মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার ঘুষুড়ি গ্রামের শহর আলী গাজীর মেয়ে রোজিনা খাতুন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা অত্যান্ত অসহায় এবং ভূমিহীন পরিবার। কোন জমি জমা না থাকায় হাওড়ার নদীর তীরে ঝুপড়ি ঘর বেধে পিতা আমাদের নিয়ে বসবাস করতেন। তৎকালিন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এসিল্যান্ডসহ স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পার্শ্ববর্তী ঘুষুড়ি ব্রীজের পাশে নদীর জেগে ওঠা চরে আমাদের বসবাসের জন্য একখন্ড জমি প্রদান করেন। সরকারের দেওয়া ওই জমিতে আমরা দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। দুটি ছেলে সন্তান জন্মের পর স্বামী আমাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। সেই থেকে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান দিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে অতিকষ্টে বেঁচে আছি। পরিশ্রম করে সন্তানদের মানুষ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী পরম্পদলোভী ঈমান আলীর ছেলে জাকির হোসেন গং উক্ত সরকারি খাস জমি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে নিজেরা জবর দখলের চক্রান্ত চালাতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সুযোগ বুঝে চাম্পাফুল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর মান্নানের নির্দেশে ও জাকিরের নেতৃত্বে জহুর ঢালীর ছেলে রফিক, ছাকা গাজী, মোফাই, মোস্ত,আনিছুরসহ অন্যান্যরা আমাদের উক্ত জমি জোর পূর্বক দখলের হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে।

রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটায় কাজে জন্য পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সুযোগে গত ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মান্নান মেম্বরের নির্দেশে এবং জাকিরের নেতৃত্বে রফিক, ছাকা গাজী, মোফাই, মোস্ত ও আনিছুরসহ ২০/২৫ জন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় বাধা দিতে গেলে তারা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসা আমার মা জরিনা খাতুন, বোন ফতেমা খাতুন, ছেলে বাবু, রায়ছুল, ভাবী শরিফাসহ পরিবারের মহিলাদেরকেও মারপিট করে গুরুতর আহত করে তারা। এসময় তারা বাড়ির সব বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যায়। এছাড়া বাড়িতে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকর, মোবাইলসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে এবং আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙে সেখানে ঘেরাবেড়া দেওয়ার চেষ্টা চালায়।

তিনি আরো বলেন, জাকির হোসেন গংদের মারপিটে আমরা ৫/৬ জন মারাত্মক আহত হলেও চিকিৎসা নিতে আমাদের হাসপাতালেও যেতে দেয়নি তারা। এঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ নেয়নি। থানায় মামলা না নেওয়ায় আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জাকির ও মান্নান গং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলছেন দেশে এখন কোন আইন নেই, বিধায় হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিলেও আমাদের কিছু হবে না। তাদের ভয়ে আমরা এখনো বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

তিনি ওই সন্ত্রাসী ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দ্রুত যাতে বাড়িতে ফিরতে পারে যে ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!