রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত কমিটি। নির্মাণকাজে দুর্নীতির প্রমাণের ভিত্তিতে শনিবার (৬ মার্চ) তার বিরুদ্ধে এ সুপারিশ করা হয়। ফলে ভিসির পদ হারাতে পারেন সম্প্রতি বহুল আলোচিত এই অধ্যাপক।
ইউজিসির তদন্ত কমিটির সদস্য ফেরদৌস জামান গণমাধ্যমকে বলেন, তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। তিনি একটি প্রকল্পের মোট তিনটি স্থাপনার নকশা নিজের ইচ্ছে মতো পরিবর্তন করে খরচ ১৩০ শতাংশ বাড়িয়েছেন। আগের পরামর্শক বাদ দিয়ে নিজের ভাগ্নেকে প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছেন। এখন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় চার বছর আগে। এর মধ্যে আছে ১০ তলা শেখ হাসিনা ছাত্রী হল, ড. ওয়াজেদ মিয়া গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ তলা ভবন,‘স্বাধীনতা স্মারক’ নামে একটি শহীদ মিনার ও দুইটি গবেষণাগার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৮ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারপর উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ একনেকের কোনো অনুমোদন ছাড়াই নকশা পরিবর্তন ও পরামর্শক বাদ দিয়ে তার ভাগ্নেকে পরামর্শক নিয়োগ করে কাজ চালান।
ফেরদৌস জামান জানান, মূল প্রকল্প ছিল ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার। তিনি এটার ব্যয় বাড়িয়ে করেছেন ২১৩ কোটি টাকা। তবে প্রধান পরিবর্তন হলো টয়লেটের সংখ্যা বাড়িয়ে দুই গুণ করা। এতে নির্মাণের পর ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা ছিল বলে মনে করে তদন্ত কমিটি মনে করে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে খোদ শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষদাগার করেন। এর জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বক্তব্য ভিত্তিহীন। আর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলেছে, ভিসি কলিমুল্লাহ’র অভিযোগ অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউজিসি। এছাড়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি