খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে
  শহিদ আবু সাঈদ হত্যা মামলা : তদন্তে মিলেছে ৩০ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

ভিসি নিয়োগ ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্ত কুয়েট শিক্ষক সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা চার মাস বন্ধ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র একাডেমিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে যারা সাড়ে পাঁচ বছর ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন, তারাসহ সকল শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। ঠিক একইভাবে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন এবং হতাশ অভিভাবকরাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের এ অচলাবস্থা নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)’র চেয়ারম্যান কুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে ফোন করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার অনুরোধ জানানোর পর শিক্ষার্থীদের ভেতর আশার আলো জেগেছিল আজ হয়তো শিক্ষক সমিতির সভা থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কিন্তু শিক্ষক সমিতির ওই সভায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা তাদের পূর্বের অবস্থানেই অটল রয়েছেন। বরং সভা থেকে অতি দ্রুত ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে।

সোমবার (২৩ জুন) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ ঠিক করতে শিক্ষক সমিতির এই সভা শুরু হয়, চলে বেলা ১ টা পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাহিদুল ইসলাম।

সভা শেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘কুয়েটের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য দ্রুত ভিসি নিয়োগ দিতে আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষকদের পূর্বের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে। সভায় শিক্ষকরা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভাইস চ্যান্সেলার দরকার। তার অবর্তমানে অনেক সিদ্ধান্ত এবং সংকট নিরসন দেওয়া সম্ভব নয়। একারণে শিক্ষক সমিতি সরকারের কাছে অবিলম্বে একজন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে। সুতরাং ক্লাস আপাতত চালু হচ্ছে না’।

সভা শেষে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. নুরুন্নবী মোল্লা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমাদের সংসদ থেকে পাশ করা যে আইন, ঐ আইনে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক দায়ভার উনার উপর। আমরা কিন্তু শুরু করতে চাই, বাট উই নিড এ লিডার। আমরা করতে গেলে কে আপ্রুভাল দিবে? একটা একাডেমিক ক্যালেন্ডার লাগবে। কে দিবে? প্রথম বর্ষের ক্লাস কখন শুরু হবে একাডেমিক কাউন্সিলে পাস হতে হবে। এই মেসেজটা আমরা বুঝাতে পারছি না। ভিসি আসা মানে ক্লাসে যাওয়ার রাস্তা তৈরি হওয়া। এজন্য সরকারকে দ্রুত ভিসি নিয়োগ দিতে হবে’।

এদিকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ছাত্র কল্যাণ কমিটি রেজিস্ট্রার বরাবর প্রশাসনিক কার্যক্রম দ্রুত চালুর আবেদন করেছেন। ওই আবেদনে উল্লেখ করেন. বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার যে সিদ্ধান্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা সেশনজটে পড়ে আছি। সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। আবেদনে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন ভিসি না থাকায় আপনি আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবকের দায়িত্বে আছেন। সিন্ডিকেটের ওই সাভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

দীর্ঘদিন ক্লাস না হওয়ায় সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও। সোমবার রাজশাহী থেকে এক অভিভাবক খুলনা গেজেটকে ফোন করে অভিযোগ করেন, কুয়েটের দায়িত্বশীল কেউ ফোনও ধরেন না। তিনি অবিলম্বে ক্লাস শুরুর দাবি জানান।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থা নিরসনে ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ও ভাতাদিসহ অন্যান্য আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে বিকল্প নির্দেশনা চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর ২২ জুন চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!