খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

ভিক্ষাবৃত্তি

মাজরুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ থেকে

ভেড়ামারা চরের খাস জমি নিয়ে অনেক দিন ধরে ফ্যাসাদ চলছে। ততোদিনে আমার কোলে-পিঠে দুট্যা ছ্যাল্যা আলো। ঘরের লোকটা পরের জমিনে মুনিশ খাট্যা যে টাকা পাছিল তাথেই কোনোরকমে দুবেলা প্যাট চলছিল।

এখন সেই দিন আর নাই।চরের খাস জমির বাল্যা মাটিতে চাপা পড়ে গেলছে। রহ্যা গেলছে শুধু ছ্যাল্যা দুট্যাকে লিয়া গাঁয়ে গাঁয়ে ভিক্ষ্যা করা।

এমন ধারা দশা হবে আমি ভাবতে পারিনি। আমার খুব কষ্ট হয়।ক্যানে হবে না ! এডা তো সত্য কথা আমার মিনস্যা দলকে খুব ভালোবাসত। তবে ফারাক এখানেই যে আমার মিনস্যা ফন্দি ফিকির জানত না।দল তার পরানপিয়ো ছিল। আমার মিনস্যা দলের লাগ্যা পরাণ দিয়া দিতক। কোনো বাধা সে মানত না।

ভেড়ামারা চরের খাস জমি দখল্যারা জোর করে আবাদ করতক। দল ক্ষমতায় আলো, আস্যা এক্ষুন সেই খাস জমি উদ্ধার করে গরিব মানুষের মধ্যে বিলিবন্টন করতে চাহইল। গাঁয়ে গাঁয়ে মিটিং করল। মিছিল করল। তারপর একদিন ভেড়ামারা চরের খাস জমি উদ্ধারের জন্য ডাক দিলো দল।

আমদের খায়্যা না খায়্যা বেশ দিন গুজরাছিল। কিন্তুক সেডা বেশি দিন রহলো না। দলের ডাকে খাস জমি উদ্ধারের জন্য লড়াইয়ে ঘরের লোকটাও গেল। মাথায় পাগড়ি, হাতে নিশান। দখল্যাধের লাঠ্যাল আমার জীবনের যতকিছু ভাঙ্যা দিল। ‘ও’-খুন হল।আর পাট্টা পেল দলের সুবিদাবাদী লোক গুলান।

মিনস্যার মৃত্যু দিনে ক’বছর ঘটা করে ছবিতে ফুলের মালা দিল। এখন কিছুই হয় না। শুদু আঁধারে ঢাকা পড়ে গেল আমার সেইদিন গুলান। দলের লোক গুলান আমার কথা একবারও ভাবে না। খিদের জ্বালায় আমাকে ছুটতে হয় লোখের দুয়্যারে দুয়্যারে। আর যারা পাওয়ার তারা পায়্যা তলে তলে ঘর গুছিয়ে, মুখ মুছ্যা বসে গেলছে।

ঘরে দুট্যা সুমত্ত মায়্যা। বিহ্যা দূরের কথা , ঠিক মতন তাধের ভাত কাপড় দিথে পারিনা। গাঁয়ে গাঁয়ে ভিক্ষ্যা করা বই এত দিনপরও কপালে একটুকুন জমি জুটেনি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!