দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখলে নিয়েছে তালেবান। দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনে প্রশাসনের শীর্ষে যারা থাকবেন তাদের মধ্যে অন্যতম শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই।
২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার আগে তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা স্তানিকজাই নিজের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের দেরাদুনে মিলিটারি অ্যাকামেডিতে (আইএমএ)। টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া টাইমস ও ইকোনোমিকস টাইমসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ খবর বলা হয়েছে।
১৯৮২ সালে আফগান ক্যাডেট হিসেবে দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এই শীর্ষ স্থানীয় তালেবান নেতা। ব্যাচমেটদের কাছে তিনি শেরু নামেই পরিচিত ছিলেন। শরীরিকভাবে শক্তিশালী হলেও তার উচ্চতা আহামরি কিছু ছিল না। এমনকি ধর্মান্ধ বলেও পরিচিতি ছিল না তার।
মাত্র ২০ বছর বয়সে দেরাদুনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পদক পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ডি এ চতুর্বেদী ছিলেন শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাইয়ের ব্যাচমেট।
ভারতের স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন দেশের ক্যাডেটরা আইএমএতে ভর্তি হতে পারতেন। আফগান ক্যাডেটরাও আইএমএতে ভর্তির সুবিধা পেতেন। সেই সুবাদেই সেখানে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান স্টানিকজাই।
সেই সময় তার ব্যাচমেটরা বলছেন, আর দশটা সাধারণ ছেলের মতোই ছিলেন স্টানিকজাই। বন্ধুবৎসল বলেও পরিচিতি ছিল তার। ভারতের হৃষিকেষের গঙ্গায় ‘শেরু’র সাঁতারের একটি ছবিও আছে বলে জানিয়েছেন তার সেই সময়কার সহপাঠীরা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন স্তানিকজাই। দেড় বছর আইএমএ’তে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ফের আফগানিস্তানে ফিরে যান তিনি। সেখানে আফগান ন্যাশনাল আর্মিতে লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ইসলামিক লিবারেশন অব আফগানিস্তানের হয়েও যুদ্ধ করেছেন স্তানিকজাই।
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই প্রায় এক দশক ধরে দোহায় বসবাস করেছেন। ২০১৫ সালে সেখানকার রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। তিনি তালেবানের হয়ে আফগান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি দেশে কূটনৈতিক সফরে তালেবানদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন স্তানিকজাই।
খুলনা গেজেট/কেএম