খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

ভারতে ‌ফের ১০ দিনের রিমান্ডে পি কে হালদার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বহুল আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা লোপাটের মূলহোতা প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) ফের ১০ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন কলকাতার একটি আদালত।

মঙ্গলবার কলকাতার আদালতে তোলার পর পি কে হালদারের ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। পরে আদালতের বিচারকরা তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত শনিবার (১৪ মে) পি কে হালদারের সম্পত্তির খোঁজে দ্বিতীয় দিনের মতো পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে অভিযান চালানো হয়। সেদিন দুপুরের দিকে প্রদেশের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। পরে আদালত সেই সময় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মঙ্গলবার পি কে হালদারের মামলার অগ্রগতির বিষয়ে আদালতকে অবগত করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আইনজীবীরা।
এ সময় তারা আদালতকে বলেছেন, ভারতে অবৈধভাবে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনাকারী বাংলাদেশি নাগরিক পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। প্রাথমিক ইডি ভারতে তার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে।

মঙ্গলবার সকালের দিকে ইডির কার্যালয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পি কে হালদারকে কলকাতার আদালতে হাজির করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তাকে আদালতে নেওয়া হয়। ইডির কর্মকর্তারা বলেছেন, অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অর্থপাচারের সঙ্গে প্রদেশের কোনও রাজনীতিক জড়িত আছেন কি-না, সে বিষয়ে পি কে হালদার এখন পর্যন্ত কোনও তথ্য দেননি।

ইডি বলেছে, ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি।

দেশটির কেন্দ্রীয় এই তদন্ত সংস্থা বলছে, তারা ইতোমধ্যে পি কে হালদারের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছেন। এসব নথিতে প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য মিলেছে।
এক বিবৃতিতে ইডি বলেছে, বাংলাদেশি নাগরিক প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রীতিশ কুমার হালদার, প্রাণেশ কুমার হালদার এবং তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশান্ত কুমার হালদার নিজেকে শিব শঙ্কর হালদার নামে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
বাংলাদেশি এই অর্থপাচারকারী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান এবং আধার কার্ডও সংগ্রহ করেছিলেন। প্রশান্ত কুমার হালদারের অন্য সহযোগীরাও ভারতীয় এসব কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে সংগ্রহ করেন।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বাংলাদেশি এই নাগরিকরা প্রতারণার মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসায়িক কোম্পানি চালু করেন।

কোম্পানি পরিচালনার পাশাপাশি কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তি কিনেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইডির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার অন্তত তিনটি বাড়ি রয়েছে অশোকনগরে। এই এলাকায় তিনি মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।

এর আগে, দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।

অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি কে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!