মহামারি করোনার তাণ্ডবে বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারত বিপর্যস্ত। করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণে একদিন আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে দেশটি। শুধু তাই নয়, এক সপ্তাহের টানা সর্বোচ্চ সংক্রমণেও বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে ভারত।
রোববার (৩০ আগস্ট) সকালে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকার প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৭৮ হাজার ৭৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা নতুন বিশ্ব রেকর্ড। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৭১২ জন। দৈনিক ৭০ হাজার ৮৬৭ শনাক্ত নিয়ে ভারতে গত এক সপ্তাহে মোট ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭০ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছে; যা বিশ্ব রেকর্ড। গত জুলাইয়ের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্রে এ রেকর্ড হয়েছিল।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৭ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ ৬৬ হাজার ৪২৬ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ কোটি ৭৭ লাখ ৭ হাজার ৮৯০ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৫৫ জন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এ নিয়ে ৬১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৮ জন এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন। আর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার ৪৯৮ জন।
মৃতের সংখ্যায় ব্রাজিলের পরেই আছে মেক্সিকো। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৩ হাজার ৮১৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯১ হাজার ৭১২ জন।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত। দেশটিতে করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৭১২ জন। মৃত্যুর দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে আছে দেশটি। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৩ হাজার ৬৫৭ জন।
আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে আছে রাশিয়া। দেশটিতে আক্রান্ত ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩৪৬ জন। আর মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ২৫ জন।
সুস্থতার দিক থেকেও প্রথম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ৩৪ লাখ ৮ হাজার ৭৯৯ জন; দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল; ৩০ লাখ ৬ হাজার ৮১২ জন; এবং তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত, ২৭ লাখ ১২ হাজার ৫২০ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।