অব্যহত ভাঙ্গনের মুখে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে সাতক্ষীরায় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের ভাইরাল হওয়া বহুল আলোচিত সেই হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটি। প্রতাপনগরের নিকটবর্তী খোলপেটুয়া নদীর বন্যতলা এলাকার ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামত না হওয়ায় এবার হুমকির মুখে পড়েছে প্রতাপনগর গ্রামের ঢালী বাড়ি বায়তুল মোকাররম মসজিদটি। এলাকাবাসি মসজিদটি রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য সকলের সহযোগিতা কামানা করেছেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ডাঃ গোলাম ইয়াসিন জানান, মাত্র কয়েক বছর আগে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যায়ে তৈরি হয়েছিলো প্রতাপনগর গ্রামের ঢালিবাড়ির এই বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদটি। খোলপেটুয়া নদীর জোয়ার-ভাটার কারনে ঢালি বাড়ি (মরহুম ডাঃ আঃ রাজ্জাক সাহেবের বাড়ির সামনে) মসজিদটির অবস্থা খুবই নাজুক অবস্থা। এখনি যদি মসজিদের পাশ দিয়ে উঠে আসা নদীর ¯্রােত বাঁধ দিয়ে বন্ধ করা না যায় তাহলে হয়তো মসজিদটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। প্রতাপনগর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটির ন্যায় নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে এই মসজিদটিও। তিনি ঢালিবাড়ির বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদটি রক্ষায় সর্বসাধারণের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
প্রতাপনগর গ্রামের তালতলা এলাকার বাসিন্দা বেলাল জামান জানান, গত ১০ আগস্ট খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রতাপনগরের নিকটবর্তী বন্যতলা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানিতে এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। সময়মত বাঁধটি সংষ্কার করা সম্ভব না হওয়ায় ভাঙ্গন অব্যহত থাকে। প্রতিদিন নতুন নতুন ভূমি নদীতে চলে যেতে থাকে। একপর্যায় নদীর পানি প্রবেশ শুরু করে প্রতাপনগর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটিতে। গত ৮ অক্টোবর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর ভাটার পানির টানে হঠাৎ করে মসজিদটি ভেঙ্গে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, বাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্ট এখনো মেরামত না হওয়ায় প্রতাপনগর গ্রামের খোলপেটুয়া নদীর জোয়ার-ভাটা অব্যহত রয়েছে। এতে করে ওই গ্রামের নতুন নতুন স্থাপনা ও হুমকির মুখে পড়তে শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতাপনগর গ্রামের ঢালিবাড়ির বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদটিও পড়েছে হুমকির মুখে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে হাওলাদার বাড়ির মসজিদটির মত এইম মসজিদটিও নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এখুনি যদি মসজিদটির চারিপাশে মাটি দিয়ে উচু বাঁধ দেয়া যায় তাহলে হয়তো পানি ঢোকা বন্ধ করা যাবে। তা না হলে মসজিদটি রক্ষা করা যাবে না। তিনি এব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে গত ১০ আগষ্ট বন্যতলা বেঁড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডে ও জাইকার রশি টানাটানির কারণে বাঁধটি এখনো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ভাঙ্গন পয়েন্টটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে দুইবার কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢোকা অব্যহত থাকায় ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। গত ৮ অক্টোবর জুম্মার দিন সকালে প্রতাপনগরের হাওলাদার বাড়ির মসজিদটি নদী গর্ভে চলে যায়। একইভাবে ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে প্রতাপনগর গ্রামের ঢালিবাড়ির বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদটিও। তিনি প্রতাপনগর ইউনিয়ন রক্ষার জন্য দ্রুত বন্যতলার ভাঙ্গন পয়েন্টটি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এএ