ভরা মৌসুমে বাড়ছে চালের দাম। এক মাসের ব্যবধানে মান ভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ৫-১৫ টাকা বেড়েছে। এ অবস্থায় চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে অ্যাকশনে যেতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেউ অবৈধভাবে চাল মজুত করলে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৩০ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি । বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মার্কেট মেকানিজম নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও ছিলেন। আমরা কীভাবে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে পেমেন্টগুলো এনশিউর করতে পারব, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে চাল এবং তেল নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ভরা মৌসুমে চালের কেন দাম বেশি, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার কিছু রিপোর্ট এবং সাজেশন ছিল। এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমাদের মার্কেট সার্ভে করে দ্রুত অ্যাকশনে যেতে বলা হয়েছে।
সচিব বলেন, কোথায়-কোথায় চাল কে স্টক করে? আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে। ধরুন আমি যে কাজটি করব, ইন্ডাস্ট্রি করব বা প্রোডাকশনে যাব আমারতো মেমোরেন্ডাম অ্যাসোসিয়েশন আছে। মেমোরেন্ডাম অ্যাসোসিয়েশনেতো বলা আছে, আমি কী করতে পারব। আমাদের মনে হচ্ছে যে এমনও হতে পারে, কেউ কেউ মেমোরেন্ডাম অ্যাসোসিয়েশনকে ব্রেক করে চালের ব্যবসায় নেমে গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ধরুন আমার হাজার-হাজার কোটি টাকা আছে। আমি মার্কেটে নেমে ধান আর চাল কিনে ফেললাম, স্টক করলাম। তো এগুলো কতদিন আমি রাখতে পারব? এই বিষয়গুলো সুপারভিশন করে দ্রুত নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী, সচিব, খাদ্যমন্ত্রী, সচিব আর কৃষি সচিবকে বসে দ্রুত এ বিষয়টি দেখতে এবং মার্কেট সার্ভে করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেন এ ভরা মৌসুমে চালের দাম এত বেশি থাকবে? কিছুদিন আগে তেলের ইস্যুতে যেরকম ড্রাইভ (অভিযান) দেওয়া হলো, তো ওরকম ড্রাইভ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদি কেউ আন-অথোরাইজড চাল ব্যবসা করে বা মজুত করে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার জন্য আজ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারও।
ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ধান কিনে মজুত করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সবাই প্রতিযোগিতা করে ধান কিনছে, ভাবছে ধান কিনলেই লাভ। এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা ভালো পরিণতি আনবে না। অধিকাংশ মিল মালিক বাজার থেকে ধান কিনলেও তারা উৎপাদনে যাচ্ছেন না। বাজারে নতুন চাল এখনও আসছে না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে তা গত বছরের পুরোনো। তাহলে নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়?
এ অবস্থা চলতে দেওয়া হবে না। কে কত পরিমাণ ধান কিনছেন এবং কে কত পরিমাণ চাল ক্রাশিং করে বাজারে ছাড়ছেন তা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের রিপোর্ট আকারে পাঠানোর কথা বলেন মন্ত্রী।