আসর জুড়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন দুর্দান্ত। ফাইনালের মঞ্চেও জ্বলে উঠলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। আর অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম প্রমাণ করলেন টি-টোয়েন্টিতে এখনও কতটা কার্যকরী তিনি। এই দুইয়ের দাপটে বিপিএল ফাইনালে সিলেট স্ট্রাইকার্স লড়াকু পুঁজি নিয়ে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল তারকাবহুল কুমিল্লাকে। সেই লড়াই জিতে চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জমজমাট ফাইনালে তারা সিলেট স্ট্রাইকার্সকে উড়িয়ে দিয়েছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৭৬ রানের লক্ষ্য দেয় সিলেট। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন দল।
চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও মূলতঃ দুটি জায়গায় ধাক্কা খেয়েছে কুমিল্লা। জনসন চার্লসের ক্যাচ ছেড়েছেন রুবেল হোসেন। এরপর এই পেসারের করা ১৭তম ওভারেই শিরোপা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে কুমিল্লা। সেই চার্লসের ব্যাটেই আসে জয়।
রান তাড়ায় নেমে ঝড়ো শুরু করেন কুমিল্লার ওপেনার লিটন দাস আর সুনিল নারাইন। তবে ৫ বলে ১০ করা ক্যারিবিয়ান অল-রাউন্ডারকে দ্রুতই থামিয়ে দেন রুবেল হোসেন। ২৭ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। স্কোরবোর্ডে আর ৭ রান যোগ হতেই অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে (২) থিসারা পেরেরা তালুবন্দি করেন জর্জ লিন্ডে। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে একটু চাপে পড়ে কুমিল্লা। লিন্ডের বলেই সীমানায় সহজ ক্যাচ দিয়ে রুবেলের সৌজন্যে বেঁচে যান জনসন চার্লস। তখন তার রান ছিল মাত্র ৮। এর মূল্য চোকাতে হয় সিলেটকে। দারুণ জুটি গড়ে তোলেন লিটন আর চার্লস।
৩৬ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন। ১২ ওভারে কুমিল্লার স্কোর তিন অংক ছাড়ায়। ৭০ রানের এই জুটি ভাঙে লিটনের বিদায়ে। রুবেলের বলে শান্তর দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে লিটন করেন ৩৯ বলে ৭ চার ১ ছক্কায় ৫৫ রান। জীবন পাওয়া চার্লস ৪১ বলে তুলে নেন ফিফটি। আর ক্যাচ ফেলা রুবেল ১৭তম ওভারে ৩ ছক্কা ১ চার খেয়ে দেন ২৩ রান। শেষ তিন ওভারে কুমিল্লার দরকার হয় ২৯ রানের। যেটা শেষ ওভারে গিয়ে দাঁড়ায় ৩ রানে। মাশরাফির করা শেষ ওভারের প্রথশ বলটিই ছিল ওয়াইড। ৪ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। জনসন চার্লস ৫২ বলে ৭ চার ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৭৯* আর মঈন আলী ১৭ বলে ২৫* রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান তোলে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ঝড়ো শুরু করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দ্বিতীয় ওভারেই দলীয় ১৮ রানে তৌহিদ হৃদয়ের (০) বিদায়ে ধাক্কা খায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। আজও তিন নম্বরে নেমেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি, তবে ব্যাট হাতে ভূমিকা রাখতে পারেননি। আন্দ্রে রাসেলের শিকার হয়ে ফিরেন ১ রানে।
একপ্রান্তে বিধ্বংসী মেজাজে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী হন মুশফিক। দুজনের ৭৯ রানের জুটিতে শক্ত ভিত পায় সিলেট। ৩৫ বলে ফিফট তুলে নেন শান্ত। মঈন আলীর বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৪৫ বলে ৯ চার ১ ছক্কায় ৬৪ রান। রায়ান বার্ল (১৩) ব্যর্থ। সুনিল নারাইনের বলে গোল্ডেন ডাক মারেন থিসারা পেরেরা। অন্যদিকে মুশফিক ফিফটি তুলে নেন ৩৫ বলে। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৮ বলে ৫ চার ৩ ছক্কায় ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৭৫ রান। ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
খুলনা গেজেট/কেডি