দেশে সরকারের সাধারণ ছুটি এবং ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের জেরে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল এবং ভারতের পেট্রাপোল বন্দর বাণিজ্যে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এই দুই বন্দরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের উভয় পাশে প্রায় দেড় হাজার পন্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায়।পন্যবাহী ট্রাকগুলো বন্দরে প্রবেশ না করা এবং ট্রাকগুলো খালি না হওয়ায় হাজার হাজার টাকা ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে আমাদের।
একটি সূত্র জানায়, ভারত থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাক বাংলাদেশে ঢোকামাত্র অনলাইনে এন্ট্রি করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভাররা বেনাপোল বন্দরে ঢুকছে না। কিন্তু পচনশীল পণ্য ‘ম্যানুয়াল’ ব্যবস্থায় আমদানি করা হচ্ছে। গত দুইদিনে ভারত থেকে পচনশীল পণ্যের প্রায় ৪৫টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে বলে জানান, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক সাজেদুর রহমান।
গত মঙ্গলবার দু-দেশের সংগঠন ‘ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বেনাপোলের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি শামসুর রহমানের কাছে দাবি জানান, পচনশীল পণ্য যেমন ‘ম্যানুয়াল’ ব্যবস্থায় নিচ্ছেন,ঠিক একইভাবে সাধারণ পণ্য কিভাবে নেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য।বেনাপোল বন্দরে আটকে থাকা প্রায় ৫০০ ভারতীয় ট্রাকের পণ্য দ্রুত খালি করে ট্রাকগুলি ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার দাবিও জানান কার্তিক চক্রবর্তী।
ভারতীয় ট্রাক চালক রঞ্জন বলেন,আমরা বেনাপোল বন্দরে আটকে থাকা কয়েক’শ ট্রাকচালক ও খালাসি চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছি। খাওয়া-দাওয়ার অসুবিধা হচ্ছে। সঙ্গে টাকা পয়সা যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের ট্রাকগুলো খালি করে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করেন।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, সাধারণ ছুটি শেষে বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু না হলে ও ম্যানুয়াল সিস্টেমে সকাল থেকে আমদানি রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট চালু হলে পুনরায় ডিজিটাল সিস্টেমে এন্ট্রি করা হবে। দু-দেশে আটকে থাকা পন্যভর্তি আমদানি-রফতানি ট্রাকগুলো যাতে বন্দরে প্রবেশ করতে পারে এবং খালি ট্রাকগুলো নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে