খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুষ্টিয়ার খোকসায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন শিশু নিহত, আহত দুই
  দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের টাকা ছিনতাই, তিন প্রতিষ্ঠান সিলগালা

বেনাপোল প্রতিনিধি

আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এলাকা থেকে যাত্রীদের টাকা ছিনতাই থামছেই না। এটা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষ, বাজার কমিটি ও পরিবহন সমিতি মিলে ছিনতাইকারীদের তিনটি দোকান তালা মেরে সিল করে দেন।

সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ৮ জন পাসপোর্টধারী যাত্রীর কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেনাপোল চেকপোস্টের একটি মার্কেটের গলি থেকে দুজনের ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিয়েছেন স্থানীয় বিজিবি, বন্দর ও বাজার কমিটি। ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় বাকি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

জানা যায়, স্থলপথে ভারত যাতায়াতের প্রধান দ্বার হচ্ছে বেনাপোল চেকপোস্ট। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি, বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। যাত্রীরা রাত ৩টার দিকে বাস থেকে নামার পর বন্দরের বাস টার্মিনাল ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থেকে পাসপোর্ট ফরম ও ভ্রমণ কর কেটে দেয়ার কথা বলে কিছু চিহ্নিত ছিনতাইকারী বিভিন্ন অলি গলিতে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার নাম্বার এন্টির কথা বলে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে এসব ঘটনা ঘটলেও মিলছে না কোন প্রতিকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের আশপাশে গোপনে বসে থাকে দালাল পরিচয়ের ছিনতাইকারীরা চক্রের সদস্যরা। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের এরা টার্গেট করে। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলে তারা বিভিন্ন মার্কেটের গলিতে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকা ছিনতাই করছে। এসব ছিনতাইকারীদের ভয়ে স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ এরা দলে অনেক ভারী। আর এসব চক্রগুলোর নানা ভাবে সহযোগিতা করে নামধারী কিছু সাংবাদিক, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন ও অসাধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল সোমবার ছিনতাইয়ের কবলে পড়া খুলনার সাগর হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি ভারতে গমনের উদ্দেশ্যে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে কয়েকজন লোক তাকে বলে অনলাইনে ভ্রমণ ট্যাক্স জমা দিলে তারা বন্দরের লম্বা লাইনের আগে ইমিগ্রেশনে পৌঁছে দিবে। পরে তাকে পাশের একটি মার্কেটের গলিতে কম্পিউটারের দোকানে বসায়। সেখানে ট্যাক্স জমা দেয়ার পর তার কাছে থাকা টাকার নাম্বার লিখতে হবে জানিয়ে ঐ ঘরের পাশের রুমে বসায় ছিনতাইকারীরা। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ৫২ হাজার টাকা নিয়ে আবার ফেরত দেয়। পরে সন্দেহ হলে গুনে দেখেন সেখান থেকে ২৩ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলেছে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে বন্দর ও বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় ৭ হাজার টাকা ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে পাশেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘুরাফেরা করলেও তারা কিছুই দেখে না।

এ ব্যাপারে বেনাপোল বন্দরে নিয়োজিত আর্মস ব্যাটালিয়নের ওসি বাদল চন্দ্র জানান, পাসপোর্টধারীদের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা দুঃখজনক। এরকম ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটে। পরে ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধার করে দেয়া হয়। বন্দর এলাকায় ওদের বিরুদ্ধে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।

বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুমন ভক্ত জানান, ছিনতাইয়ের অভিযোগে বহুবার ছিনতাইকারীদের প্রতিষ্ঠান তালা মেরে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে আটক ও করা হয়েছে। তবে তারা জেল থেকে ফিরে এসে আবারও সেই অপরাধ করছে। ছিনতাই পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে পুলিশকে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা করতে হবে।আর যাত্রীদের ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!