খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে; আনিসুল হকসহ ১৩জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে
  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

বেতনা নদীর বেঁড়িবাধ ভেঙে নিম্নাঞ্চলের ২৫ গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকায় বেতনা নদীর বেঁড়িবাধ ভেঙে নিম্নাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে বিনেরপোতার মহাশশ্মান সংলগ্ন বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবাহিত হওয়ার একপর্যায় বিকালের দিকে প্রায় ৩০ ফুট এলাকার বাঁধ ভেঙে যায়।

বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের বিনেপোতা, বসুন্ধরা, রাজনগর, শিবনগর, এগারোআনি এবং তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের নিমতলা, রথখোলা, কাপাসডাঙ্গা ও হরিনখোলাসহ ধানদিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘার মৎস্য ঘের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষরা। বেড়িবাঁধ ভাঙন কবলিত এলাকায় সড়কের উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।

লাবসা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বিশ্বনাথ মন্ডল জানান, বেতনা নদীর বঁড়িবাধ ভেঙে সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের বিনেরপোতা, রাজনগর, শিবনগর, এগারোআনি ও তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের নিমতলা, রথখোলা, কাপাসডাঙ্গা ও হরিনখোলাসহ ধানদিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাসহ প্রায় ২৫ গ্রামের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বিনেরপোতা এলাকার মামুন হোসেন বলেন, বিনেরপোতা, গোপীনাথপুর, মাগুরা, খেজুরডাঙ্গা ও তালতলা এলাকার নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। অনেকের বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এলাকার কবরস্থান পর্যন্ত পানির নিচে ডুবে রয়েছে। অনেক গ্রামের রাস্তাও পানির নিচে ডুবে রয়েছে। যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এসব গ্রামের মানুষ। ফসলের মাঠ ও পুকুর পানিতে একাকার হয়ে গেছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শোয়াইব আহম্মেদ জানান, তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে সদর উপজেলা বিভিন্ন স্থানে পানির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে গেছে। বেতনা নদীর বেঁড়িবাধ ভেঙে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বেঁড়িবাধ সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন বলা যাচ্ছে না। পরে এটা নিরুপণ করা হবে।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার আনিছুর রহমান জানান, অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৫ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ও ৩ হাজারের বেশি পুকুর। ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বেতনা নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেঁড়িবাধের দুটি স্থানে ভেঙে গেছে। যা মেরামতের জন্য বাঁশ ও জিও ব্যাগসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি ম্যানেজ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে আসলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে পানি উপচে পড়ার একপর্যায় সোমবার বিকালে বেতনা নদীর বেড়িবাঁধটি পানির তোড়ে প্রায় ৩০ ফুট এলাকা জুড়ে ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে মেরামতের চেষ্টা করা হলেও পরে একই স্থানে আবারও ভেঙে যায়।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় গত তিন দিনে ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরে এ জেলায় সর্বোচ্চ পরিমাণের বৃষ্টিপাত।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!