সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পসে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ শীর্ষনেতৃবৃন্দ প্রবেশ করে জনসমাগম করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে নেমেছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করে বুয়েটের ২১ ব্যাটের পুরোকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি মধ্যরাতে এই রাজনৈতিক সমাগম ঘটিয়েছেন। তারা রাব্বির স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করে রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের যেসকল শিক্ষার্থী এই সমাগমে জড়িত ছিল তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার দাবি জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও তারা দাবি না মানা পর্যন্ত সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিও) অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে তারা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের মুখে ছাত্রলীগের এক নেতার আবাসিক হলের আসন বাতিল করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করার কথা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বুয়েট প্রশাসন নোটিশ বোর্ডে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগের ওই নেতার নাম ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের একটি দল প্রবেশ করে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার বেলা আড়াইটা থেকে রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাঁরা যে পাঁচ দফা দাবি জানান, তার প্রথমটি হচ্ছে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেনকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল (আবাসিকতা) বাতিল।’
রাতে উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের নির্দেশে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. ফোরকান উদ্দিন উল্লেখ করেন, সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনের হলের আসন বাতিল করা হলো। এ ছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
খুলনা গেজেট/এইচ