অনাস্থা ভোটে হেরে শনিবার রাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন ইমরান খান। এ ঘটনার পরদিন রোববার রাতে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভে নেমেছেন তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকরা। এ খবর জানিয়েছে জিও টিভি।
পাখতুনখোয়ার অন্তত ৪০টি স্থানে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়েছেন। সদ্যবিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের জমায়েত থেকে বিভিন্ন স্লোগান ভেসে আসছে।
ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর ইমরান আজ এশার নামাজের পর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেন। তিনি বলেন, বিদেশি-অর্থায়নের নাটকের বিরুদ্ধে ঘর থেকে বেরিয়ে সবার প্রতিবাদ করা উচিত। আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদেশি ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।
পিটিআই আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটি বলছে, যাতে তারা আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে।
এর আগে অনাস্থা ভোটকে সামনে রেখে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইমরান বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে বিদেশি সরকার বসাতে দেব না। আমরা এমন জাতি নই যে আমাদের টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করা হবে।
পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। তবে এ প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
সেদিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিন শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ৭ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। দিনভর চলে নাটকীয়তা। কয়েক দফায় অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
পরে মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই তার বিরুদ্ধে ভোট দেন।