খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

বিয়ের প্রলোভনে নার্সের সাথে ক্লিনিক মালিকের অবৈধ সম্পর্ক

হরিণাকুন্ডু প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার সাধুহাটি রাবেয়া জেনারেল হাসপাতালের মালিক সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি ওই গ্রামের হাজী ওমর আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় রোববার কয়েকদফায় ক্লিনিকটিতে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বিষয়টি নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।

নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী নারী হরিণাকুন্ডু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ওই নারী বলেন, সোহরাব হোসেন ওই ক্লিনিকের মালিক। তিনি নিজেই সেখানে অপারেশনসহ সব চিকিৎসা দেন। প্রায় এক বছর আগে আমি সেখানে চাকরি নিই। প্রথম থেকেই আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এভাবে প্রায় ছয়মাস চলার পর আমি তাকে বিয়ের কথা বলি। তখন সে আমাকে মারধর করে। প্রতিনিয়ত আমাকে মারধর করতো সে। ঘটনার দিন আমাকে মারধর করে আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। ছয়মাস পর পর নার্সদের তাড়িয়ে দিয়ে নতুন নার্স নিয়োগ দেয় সোহরাব হোসেন। তাদের সবার সাথেই প্রতারণা করে শারীরিক সম্পর্ক করে সে। আমি এই প্রতারকের বিচার চায়।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সোহরাব হোসেন বলেন, মেয়েটি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল তাই আমি তাকে ফেরাতে দুটি চড় মেরেছি।

এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এই যুবতীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক জানান, কিছুদিন পর নতুন নতুন নার্স নিয়োগ দিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে ক্লিনিক মালিক সোহরাব। এর প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এ নিয়ে প্রায়ই প্রতিষ্ঠানটিতে বিচার সালিশ হয়। তবে সে টাকার বিনিময়ে সবাইকে ম্যানেজ করে নেয়। ক্লিনিকটি নারী নির্যাতনের কারখানায় পরিণত হয়েছে বলেও এই যুবক জানান।

সাধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নাজির আহমেদ বলেন, ওই ক্লিনিকে প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যা হয়। আর আমাদের পড়তে হয় ঝামেলায়। ঘটনাটি জানার পর আমি সেখানে গিয়েছিলাম। ওই নার্স আমার কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ করেছে।

এদিকে রোববার এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্লিনিকটিতে কয়েকদফা অভিযান চালায় জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিনিধিদল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটি।

সিভিল সার্জন শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, এলাকার লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেছি। অভিযুক্ত সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগেও পেয়েছি।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিথিলা ইসলাম জানান, আমাদের একজন চিকিৎসক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ওই ক্লিনিকটিতে অভিযান পরিচালনা করেছেন। সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র নিয়ে আমার কার্যালয়ে দেখা করতে এর মালিককে বলা হয়েছে। বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকলে এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমি নিজেও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলেছি। সে মামলা দিতে রাজি হয়নি। মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!