পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় বিয়ের কয়েক ঘণ্টা পরই বগুড়ার শিবগঞ্জে এক নবদম্পতি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ মঙ্গলবার(২২ মার্চ) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ২১ বছরের মো. সবুজ ও ১৯ বছরের মার্জিয়া জান্নাত।
সবুজ মাঝিহট্ট ইউনিয়নের দামগারা কারিগরপাড়ার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। আর জান্নাত পাশের গ্রামের মাসিমপুর চালুঞ্জা তালুকদারপাড়ার মালয়েশিয়াপ্রবাসী মো. রাজ্জাকের মেয়ে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত উল্লাহ।
তিনি জানান, স্থানীয়দের খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসআই ইমরান হোসেন ও নাসির নামের দুই কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়। তারা নিহত দুজনের বাড়িতে গিয়ে সুরতহাল শেষে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
স্থানীয়দের বরাতে হাসমত উল্লাহ জানান, সবুজ ও জান্নাত পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সবুজ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন, তার পরিবার দরিদ্র। তাই তিনিও দিনমজুরের কাজ করতেন। এসব কারণে জান্নাতের পরিবার ওই সম্পর্ক মেনে নেয়নি।
কিন্তু পরিবার না মানলেও প্রায় ছয় মাস আগে সবুজ ও জান্নাত লুকিয়ে বিয়ে করেন। তবে জান্নাতের পরিবার ঘটনাটি জানার পরপরই তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ করাতে বাধ্য করে।
পুলিশ পরিদর্শক আরও জানান, চলতি মাসের প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন আগে জান্নাতের বাবা মালয়েশিয়া থেকে তার পরিচিত এক ছেলের সঙ্গে মুঠোফোনে জোরপূর্বক তার (জান্নাতের) বিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর গত সোমবার জান্নাত ও সবুজ আবারও পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা সবুজের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যার দিকে জান্নাতকে নিয়ে যান তার পরিবার।
এর পরপরই সন্ধ্যা ৭টার দিকে সবুজকে মুঠোফোনে রেখে জান্নাত কীটনাশক পান করেন। জান্নাতের বিষপানে মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পেরে সবুজও নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। দুজনের বয়স খুব অল্প। ছেলে ও মেয়ে একসঙ্গে সংসার করতে না পেরে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেও মনে হয়েছে তারা আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (ইউডি) হয়েছে।’
খুলনা গেজেট/ এস আই