চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ২৬ লাখ ২৮ হাজারে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কলম্বিয়া, পোল্যান্ড ও মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৭ কোটি ২৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৬৪৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে আড়াই হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩৮৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় পৌনে ৮ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ২৮ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৮ জন এবং মারা গেছেন ১৭৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮৮ লাখ ৮ হাজার ৬২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৫৬ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ২৮ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ১২৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৮১ হাজার ১২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬১ জন মারা গেছেন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬৮ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১২২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৭৭৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার ১১১ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৭৮৩ জন এবং মারা গেছেন ১৭৪ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৪৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৭৭ জন।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৭২৭ জন এবং মারা গেছেন ২৯৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৪ লাখ ৬ হাজার ১২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৫০ জন এবং মারা গেছেন ২৭২ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৮ জন এবং মারা গেছেন ৯১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৬ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৩৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৫১ জন এবং মারা গেছেন ১৪৯ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৯৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৭ হাজার ৩১৬ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৫২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৩ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৮১৭ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ১১০ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ১২১ জন, পোল্যান্ডে ২৩১ জন, কানাডায় ১৩৪ জন, আর্জেন্টিনায় ১৭৯ জন, গ্রিসে ৮০ জন এবং ভিয়েতনামে ১১৫ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৪৩৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ২৪০ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।