চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণে কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে ৪ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, তুরস্ক, মেক্সিকো ও ফিলিপাইন। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ কোটি ৭৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ লাখ ৬৭ হাজার।
সোমবার (২২ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ১০৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দেড় হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৮১ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ১১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৯০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৭৮ লাখ ৮ হাজার ৯২৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৪ জন এবং মারা গেছেন ৬১ জন। ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯২৭ জন মারা গেছেন। এছাড়া একইসময়ে জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৬০ জন এবং মারা গেছেন ৬০ জন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৫২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৭০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ১৫৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটা কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৪৮৪ জন এবং মারা গেছেন ৯৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৮৫ লাখ ৯২ হাজার ৮১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৫১ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৬৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৩৭৭ জন। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে ফ্রান্সে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৯ হাজার ৭৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ১২৬ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৭৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৭২২ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ৭০৪ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬২ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১০৪ জন, তুরস্কে ১৯৫ জন, পোল্যান্ডে ৪১ জন এবং ফিলিপাইনে ১৭৫ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২২৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৩৭২ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
খুলনা গেজেট/ টি আই