চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে ১২ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি হাঙ্গেরি ও তুরস্ক। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৯ কোটি ২৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ১০৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১২০০। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৩৪৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৩০০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সোয়ার চার লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯১০ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬৩৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৭১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৪৮ হাজার ৭০৪ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৬ হাজার ৩৪৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৩০৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ৩৫৩ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৪২ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৪ লাখ ২২ হাজার ৮১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৫২ জন এবং মারা গেছেন ১৪০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে সংক্রমণ ফের বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ হাজার ৪৬১ জন এবং মারা গেছেন ২৭০ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ২১২ জন মারা গেছেন। একই সময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ১৯০ জন এবং মারা গেছেন ৪২ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৩৪৫ জন এবং মারা গেছেন ১৯৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ ৩৫ হাজার ১৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৪ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮০৪ জন এবং মারা গেছেন ১১৪ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৫০ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৩ লাখ ৫ হাজার ৭৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ২৪৫ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৬৮ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৯৩ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৬০ জন, পোল্যান্ডে ৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮৪ জন, হাঙ্গেরিতে ২৪৮ জন এবং ভিয়েতনামে ১৯০ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১৯ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।