চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ১২শ’র বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সোয়া পাঁচ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মারিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, জার্মানি, রাশিয়া, জাপান ও যুক্তরাজ্য। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ কোটি ৫৫ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ২৫২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দুইশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৩ হাজার ৩৯১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩১৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ১১২ জন এবং মারা গেছেন ১১৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ২৬৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ৪০৬ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৭৩ জন এবং মারা গেছেন ২৮১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫০ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৫৩৭ জন এবং মারা গেছেন ৫০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার ২৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬৯ জন মারা গেছেন। একইসময়ে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৯১৭ জন এবং মারা গেছেন ৮২ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৩ হাজার ৪৫ জন এবং মারা গেছেন ১০৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮৭ জনের। একইসময়ে তাইওয়ানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৪৮৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭ জন।
জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৪৪০ জন এবং মারা গেছেন ৯১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৪ লাখ ৬০ হাজার ২৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪৫ হাজার ২৪৮ জন মারা গেছেন। একইসময়ে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৪৩ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১৯ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৫১০ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার ১০৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৯ জনের।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৮৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৫৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৯১২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫৬ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৮ হাজার ৬০৩ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।