ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের দেশসমূহের সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে ব্যাপক বিরোধ চলার মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু করার ঘোষণা দিল রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে এই মহড়া পরিদর্শন করবেন।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই মহড়া শুরু হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘রুশ সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ইন চিফ ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু হচ্ছে। মহড়ায় ব্যালেস্টিক ও ক্রুজ- দুই ধরনের ক্ষেণাস্ত্রই ব্যবহার করা হবে।’
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশীরাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
গত দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখেরও বেশি সেনা মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া। সম্প্রতি অবশ্য কিছু সৈন্যদল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; তবে এই বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে ইতোমধ্যে সংশয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যরাষ্ট্রসমূহ।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়, মূলত সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির করতেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছিল রাশিয়া। কারণ, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
মস্কো অবশ্য ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার বলেছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই; নিজের কেবল ন্যাটোর তৎপরতা থেকে নিজের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে চায়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যরা মস্কোর এই বক্তব্যে একেবারেই আস্থা রাখতে পারছে না। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘ইউক্রেনে হামলার অজুহাতের অংশ হিসেবে তারা ভুয়া হামলার ঘটনা ঘটোতে পারে, এটি বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট কারণ আমাদের কাছে আছে। প্রতিটি ইঙ্গিতই বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনে ঢুকবে এবং হামলা চালাবে।’
খুলনা গেজেট/ এস আই