এবারই প্রথম ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকেও ধারের অঙ্ক কিছুটা বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন অর্থবছরের জন্য বড় ঘাটতি রেখে যে বাজেট প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে নির্ভর করতে হবে বড় অঙ্কের ঋণের ওপর। আর এই ঋণের প্রায় অর্ধেক নেয়া হবে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে।
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে ব্যাংক থেকেই ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ধার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানাবিধ অনিশ্চয়তার মধ্যে নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব খাত থেকে জোগান দেয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। তারপরও তার আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
ঘাটতির এই পরিমাণ আগের যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি। অভ্যন্তরীণ উৎস ও বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে। আর সে জন্য নতুন বাজেটে বিদেশি ঋণের নির্ভরতা অনেকটাই বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এবার বিদেশ থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা আসবে বলে আশা করছেন তিনি। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ঋণ করার পরিকল্পনা জানিয়েছেন কামাল।
প্রতি বছর বড় হচ্ছে বাজেটের আকার। তবে ব্যয় বাড়লেও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে না আয়। ফলে বড় হচ্ছে ঘাটতির অঙ্ক, আর সে জন্যই বাড়ছে ঋণনির্ভরতা।
আর এই ঘাটতি পূরণে বড় নির্ভরতার জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এবারই প্রথম ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকেও ধারের অঙ্ক কিছুটা বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ১ হাজার ৬ কোটি ৩৩৪ টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৫ হাজার ১ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।
বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকিং খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা।