ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচনে জয়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেবেন আজ। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় এমএলএ (বিধায়ক) হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে শপথ নেবেন সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর আসনে জয়ী দুই প্রার্থীও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ই মমতাসহ নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রায় শেষ মুহূর্তে এই বিষয়ে পরিষদীয় দফতর ও রাজভবনের মধ্যে ফাইল আদান-প্রদানও হয়েছে।
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় বিধায়ক পদে শপথ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো অনুষ্ঠানপর্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল। রাজ্যপাল সেই সময়টিতে সায়ও দিয়েছিলেন। এরপরই বিধানসভার সচিবালয় থেকে ফের বার্তা পাঠানো হয়। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দুপুর ২টায় করার কথা জানানো হয়। কিন্তু কেন এই সময় বদল? তৃণমূলের স্পষ্ট কোনো কারণ বলেনি। তবে গ্রহ নক্ষত্রের সংযোগ দেখে বহু রাজনীতিকই যে শুভ কাজের সময় বেছে নেন, সে কথাও গোপন নয়।
এর আগে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫৮ হাজার ৮৩২ ভোটে বিজেপির প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে হারিয়ে ভবানীপুরে জয়ের হ্যাটট্রিক গড়েন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভবানীপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে কোনো সংশয় ছিল না তৃণমূল শিবিরে। চিন্তা ছিল শুধু ব্যবধানের অংক নিয়ে। উপনির্বাচনী প্রচারপর্বে মমতা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলের বক্তব্যেই বার বার ফিরে এসেছে এই ব্যবধানের প্রসঙ্গ।
২০১১ উপনির্বাচনে মমতার জয়ের ব্যবধান ছিল ৫৪ হাজার ২১৩ ভোট। এবার সেই ব্যবধান টপকে গিয়ে মমতা জিতলেন ৫৮ হাজার ৮৩২ ভোটে। ২০১১ সালের থেকে মমতার জয়ের ব্যবধান বৃদ্ধি পাওয়াটা নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। কারণ, সেসময় তার বিপক্ষে মোদি-শাহের বিজেপির মধ্যে প্রবল পরাক্রমী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তখন কংগ্রেসও ছিল তৃণমূলের সঙ্গে।
২০১৬ সালে মমতা যখন ভবানীপুর থেকে জিতলেন তখন ভোট পড়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭৫ ভোট। মোট ভোটারের ৬৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সেসময় ২৬ হাজার ২৯৯ ভোটে কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সীকে হারিয়েছিলেন মমতা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যখন এই কেন্দ্রে জিতলেন, তখন ভোট পড়েছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৩৬। মানে ৬১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। শোভনদেব জিতেছিলেন ২৮ হাজার ৭১৯ ভোটে।
তবে সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনে এবারে ভোট পড়েছে মাত্র ৫৭ শতাংশের সামান্য বেশি। অর্থাৎ আগেরবারের থেকে অনেকটাই কম। তা সত্ত্বেও তৃণমূল নেত্রীর জয়ের ব্যবধান আগের সব নির্বাচনের থেকে হাজার হাজার বেশি।
অর্থাৎ শেষবার মমতা যখন ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হন, সেসময় যা ব্যবধান ছিল, এবারে তার দ্বিগুণ ব্যবধানে জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মমতা নিজেই নিজের অতীতের রেকর্ড ভাঙলেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই