খুলনা, বাংলাদেশ | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬
  সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা মারা গেছেন
  গাজায় আরও ১৩৮ জনকে হত্যা করলো ইসরায়েল
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্যে বিরক্ত সরকার

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশে দায়িত্বরত বিদেশি কূটনীতিকদেরকে বাংলাদেশের সম্পর্কে বক্তব্য রাখার সময় তাদের সীমার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কূটনীতিকদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের সেই দিকে খেয়াল রাখা দরকার। তা না হলে অন্য চিন্তা করা হবে।’

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের জয়, সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটসহ সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনক্লোজ সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসেন তিনি।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের নানা বক্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন।

কিছুদিন ধরে বিশেষ করে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বিষয়টি নিয়ে নানা কথা বলছেন। ঢাকায় যে কর্মসূচিতেই তিনি যোগ দেন, সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন রাখেন আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। আর পিটার হাস তুলে ধরেন তার দেশের অবস্থান। সেদিন তিনি বলেছেন, ‘সহিংসতা বজায় থাকলে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এর আগেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বক্তব্য না রাখার বিষয়ে জোর দেন। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের নাম উল্লেখ করেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

গত ১১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দেশে যারা ডিপ্লোম্যাট আছেন তারা পরিপক্ব। তারা সম্মানিত লোক। তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলবে বলে আমাদের বিশ্বাস। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের পরামর্শ সরকারের দরকার নেই।’

বিষয়টি নিয়ে আবার কথা বলেন শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘…এগুলো কিন্ত আমরা সব সময় আলোচনায় বলি, প্রেসে (গণমাধ্যমে) বলি না। কারণ, হয়ত অনেকেই বিব্রত হবেন। ঘরোয়া আলোচনায় কী হচ্ছে তাও হয়তো আমরা জানার চেষ্টা করি না। আমরা সবার ওপর সম্মান রেখেই চলার চেষ্টা করি। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা মুক্তহস্তে হস্তক্ষেপ করবেন।

‘তাদের মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা কতটুকু বলতে পারবেন, তাদের দেশে অন্য দেশের কূটনীতিকরা ঠিক কতটুকু বলার অধিকার রাখেন। তাদের খেয়াল রাখতে হবে, তাদের কোনো কিছুই যেন এর বাইরে না যায়।’

কূটনীতিকরা ‘সীমা অতিক্রম করে যেতে থাকলে’তাদের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে প্রবেশাধিকার সীমিত করার ইঙ্গিতও দেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে অতিথিপরায়ণ হয়ে সব দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য আমাদের দেশের দপ্তরগুলোর দরজা খোলা রাখি, সব মন্ত্রণালয়, সকল অধিদপ্তর, সব বিভাগের জন্য এটা প্রযোজ্য; এটা যেন তারা অতিক্রম না করে। যদি করে, তবে আমরা অন্যকিছু ভাবব।’

এ সময় সাংবাদিকরা ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত আকিম ট্রোস্টারের একটি বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেহেতু নিজের কানে এটা শুনিনি, তাই এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না, তবে খতিয়ে দেখব।’

উল্লেখ্য, ঢাকাস্থ জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার বলেছেন, সমালোচনা হলেও বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের কথা বলে যাবেন তিনি এবং তার দেশ। বাংলাদেশের বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জার্মানি সহিংসতা মুক্ত রাজনীতির জন্য এখানকার স্টেক হোল্ডারদের প্রতি আহ্বানও জানিয়ে যাবেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় জার্মান বিজনেস কাউন্সিলের যাত্রা উপলক্ষে নিজ বাসভবনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, জার্মান প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহী। এই বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক পরিবেশ থাকা জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রু না ভাবার উন্মুক্ত আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় জার্মানি। একইসঙ্গে নির্বাচনকে ঘিরে যেন কোনো সহিংসতা না হয় সেটাও আশা করে তার দেশ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!