খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাঙামাটিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দের সাথে ৩ উপদেষ্টার বৈঠক চলছে

বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি

গেজেট ডেস্ক

দেশের অধস্তন আদালতের সকল পর্যায়ের বিচারকদের উদ্দেশ্যে আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ঘোষণা করবেন বিচারবিভাগের রোডম্যাপ। যেখানে উঠে আসবে নানা সমস্যা ও সমাধানের আশ্বাসসহ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়গুলো। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন অন্তবর্তিকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। থাকবেন আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ। অংশ নেবেন নিম্ন আদালতের প্রায় দুই হাজার বিচারক।

প্রসঙ্গত, বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয় বিচারবিভাগ। পৃথকীকরণের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যম ৩৯৪ জন সহকারী জজ নিয়োগ করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। গত ১৬ বছরে দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকলেও বিচারবিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করেনি বিচারবিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ ছিলো একচ্ছত্রভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে। শুধু সুপ্রিম কোর্ট থেকে নেওয়া হত পরামর্শ।

বিচারবিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিচারকদের পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়টি পৃথক সচিবালয় করে সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখা উচিত। এটা করা সম্ভব হলে বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠার সুযোগ কম থাকবে। বিচারকরা মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক সরকার বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেয়নি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের রায় কার্যকর করা হয়। এখন অন্তবর্তিকালীন সরকারের সময়ে বিচারবিভাগের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। শুধু পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাই নয়, মামলা জট নিরসনে কার্যকর পন্থা বের করার সময় এসেছে বলে মনে করেন বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিচারক বলেন, ভূমি জরিপের মামলা নিষ্পত্তির জন্য দেশের ৬১টি জেলার মধ্যে ৪২টি জেলায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। ১৯ জেলায় এখনো কোনো ট্রাইব্যুনাল নেই। ৫৪ জেলায় নেই কোনো ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালও। ২০১৮ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হলেও এসব আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির জন্য কোনো আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকরা এসব মামলার বিচার করছেন।

অধস্তন আদালতের একাধিক বিচারক বলেন, সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারি জজদের স্টেনোগ্রাফার নাই। স্টোনোগ্রাফারের পদ সৃষ্টি হলেও এখনো নিয়োগ হয়নি। স্টোনোগ্রাফার না থাকায় রায় ও আদেশ থেকে শুরু করে মামলার বিচার কার্যক্রম হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। এছাড়া দুই বছর আগে ৭৩ জন বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি পান। এসব বিচারকরা এখন পর্যন্ত আলাদা গাড়ি সুবিধা পাননি। যদিও এ ধরনের বিচারকরা জঙ্গি হামলাসহ নানা স্পর্শকাতর মামলার বিচার করছেন। যার কারণে একটা নিরাপত্তহীনতার শঙ্কায় থাকতে হয় তাদের। যদিও প্রশাসনের উপসচিব পদমর্যাদার পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিনা সুদে গাড়ি ক্রয়ের ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে বিচারকদের নেই সরকারি আবাসন ব্যবস্থা। ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে বিচারকদের। বিচারকরা বলছেন, এসব সংকট নিরসন করা গেলেই বাড়বে মামলা নিষ্পত্তির হার। যার মধ্য দিয়ে বিচারপ্রার্থী জনগণের আস্থা বাড়বে বিচারবিভাগের প্রতি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!