আগামী ২৮ মার্চ মেয়াদ শেষ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদের। বিদায়ের ঠিক আগ মুহূর্তে অবৈধভাবে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ‘শতাধিক’ শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যেই আন্দোলনে নেমেছেন আওয়ামীপন্থী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বিএসএমএমইউ ইউনিটের নেতারা। শনিবার (২৩ মার্চ) এ আন্দোলন চলাকালে বিদায়ী ভিসির ব্যক্তিগত সহকারীসহ কয়েকজনকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের অভিযোগ, বিএসএমএমইউতে হওয়া আগের নিয়োগগুলোর সময়ে দুর্নীতি হয়েছে। এমনকি বিদায়ের ঠিক আগমুহূর্তে অ্যাডহকের মাধ্যমে আরও শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। ফলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে নেমেছেন তারা।
গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের নেতৃত্বে আছেন স্বাচিপের বিএসএমএমইউ শাখার সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘সাধারণত ভিসি নিয়োগ পাওয়ার পর আগের ভিসি শুধুমাত্র দৈনন্দিন রুটিন কাজ করেন, যা ইতোপূর্বেও হয়েছে। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য শতাধিক ডাক্তার, কর্মচারী ও প্রায় ৩০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। সবাই মনে করছে এই নিয়োগের পেছনে অর্থের লেনদেন আছে।’
তবে অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদের দাবি স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই সব নিয়োগ হয়েছে। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়টি আগেই ফয়সালা হয়েছে, এখন সিন্ডিকেট বসার সিদ্ধান্তটাও আগেই নেয়া হয়েছে। এখন যারা বিরোধিতা করছে তারা কেউ আমার কাছে আসে নাই।
এদিকে, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে চলমান এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার (২৩ মার্চ) বিএসএমএমইউ ভিসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগপন্থী স্বাচিপের শিক্ষকরা। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও নার্সরা অংশ নেন।
অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনের একপর্যায়ে শরফুদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী ডাক্তার রাসেল আহমেদকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে উপাচার্যের কক্ষ থেকে বের করে দেয়া হয়। এছাড়াও বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড শাখা থেকেও একজনকে মারধর করে বের করে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি, আমার অফিসের বাইরে তারা গায়ে হাত দিয়েছে। যেকোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা গ্রহণযোগ্য না, এ ঘটনায় আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
উপাচার্য বলেন, ‘কিছু চিকিৎসক আছেন যারা বিভিন্ন সময়ে অসৎ কাজ অথবা অফিসে অনুপস্থিতির কারণে তাদের শোকজ করা হয়েছিল। এরকম কিছু লোক এ ধরনের কাজ করছে। যাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, তারাই এখন সুযোগ পেয়ে নতুন ভিসির সঙ্গে সুর দিয়ে তারা ভাবছে যে, তারা ক্ষমতায় চলে এসেছে। তারাই এগুলো করছে।’
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক দীন মো. নূরুল হক। আগামী ২৮ মার্চ মেয়াদ অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদের মেয়াদ শেষে দায়িত্ব নেবেন তিনি।