সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করছে বিএনপি। শনিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে এই মহাসমাবেশ শুরু হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি’র যৌথ উদ্যোগে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বিলুপ্তি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুন:গঠন করে তার অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা গায়েবী মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশী সাজা বাতিল, অর্থনীতির মুক্তি, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে’ এ মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আজ সকাল থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে রাজধানীতে অবস্থান করা নেতাকর্মীরা ব্যানারসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন। তাদের হাতে ছিলো জাতীয় ও দলীয় পতাকা। বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পড়ে তারা মহাসমাবেশে অংশ নিয়েছেন। এসময় নেতাকর্মীদের মিছিল ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা নয়াপল্টন এলাকা। নেতাকর্মীদের পরচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে নয়াপল্টন।
সকাল পৌনে ১১টার দিকে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে নয়াপল্টনে শুরু হয় গান-বাজনা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে এই গান পরিবেশন করা হয়।
নয়াপল্টনের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় মহাসমাবেশ সফল করতে এবং বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের মুক্তি চেয়ে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয় এই সব পোস্টার ও ব্যানারে।
এদিকে মহাসমাবেশের অনুমতির অপেক্ষা না করে শুক্রবার বিকাল থেকে সমাবেশের পূর্বঘোষিত স্থান রাজধানীর নয়াপল্টনে সমবেত হতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
বেলা গড়ানোর সঙ্গে বাড়ছিল তাদের উপস্থিতিও। সন্ধ্যায় খণ্ড খণ্ড মিছিল আর কয়েক হাজার নেতাকর্মীর স্লোগানে অনেকটাই সরগরম হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। এই নেতাকর্মীদের বেশির ভাগ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাদের কেউ তিন থেকে চার দিন আগেই ঢাকায় চলে এসেছেন। কেউ এসেছেন পুলিশের তল্লাশিচৌকি ফাঁকি দিয়ে।
এই মহাসমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পরেই শুক্রবার রাতেই শুরু হয় মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি। মঞ্চ তৈরির জন্য আনা হয় ট্রাক ও বাঁশ। ভোর হতেই মঞ্চের কাজ শেষ হয়। আর রাত যতই বাড়ে নেতাকর্মীদের ভিড় ততই বৃদ্ধি পায়। আর সকাল থেকেই সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লাগাতার সরকার ও আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
অন্যদিকে মহাসমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং এর আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম