আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমাদের কথা হলো এটুকু, আমরা ঢাকা শহর অচল হতে দেবো না।’ আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি ১০ লাখ লোক বা আরও বেশি ঢাকা শহরে ঢোকে, যেটা তারা (বিএনপি) বলছেন, তাহলে তো মিসম্যাচ হয়ে যাবে কমিউনিকেশন, এটা-ওটা। এগুলো যাতে তারা না করে সেটার জন্য আমরা অনুরোধ করব।’
‘পিটার হাস বলেছেন, তোমরা আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেবে না কি? আমরা বলেছি, আসা-যাওয়া বন্ধ কেন করব! ঢাকায় তো সবারই প্রয়োজন। রোগীর প্রয়োজন, বিদেশে যাওয়ার হলে সব কিছু তো ঢাকা কেন্দ্রীক। কাজেই আসা-যাওয়া বন্ধ করার প্রশ্নই আসে না। তারা আসবে, তারা যাবে, সেখানে আমরা বাধা দেবো না। আমরা কোনো চিন্তাও করছি না। আমরা শুধু এটুকু বলবো, তারা যেন কোনো ভায়োলেন্সে লিপ্ত না হয়। রাস্তায় চলাচল তারা যেন সচল রাখে। এটুকুই আমাদের রিকোয়েস্ট, আমরা তাকে জানিয়ে দিয়েছি,’ বলেন তিনি।
একজন রাষ্ট্রদূত একটি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট কর্মসূচির বিষয়ে জানতে এসেছেন। এটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ভেতরে পড়ে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রশ্ন আমি আপনাদের কাছে করতে চাই। আমার কথা হচ্ছে, তিনি এসেছেন। তিনি একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, তিনি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, আমরা তাকে উত্তর দিয়েছি। এটা করতে পারে কি পারে না সেটা আমার দেখার বিষয় না। সেটা আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে রাজপথ। বিএনপিও কর্মসূচি দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো রাজনৈতিক বক্তব্য। আমাদের নেতাদের উজ্জীবিত রাখার জন্য আমাদের রাজনৈতিক নেতারা বলবেনই এগুলো। কেউ বলবে আমরা দখলে রাখবো, কেউ বলতে তারা দখলে রাখবে; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার কথা হলো, যে কর্মসূচি দিক, রাস্তা-ঘাট বন্ধ না করে জনচলাচলের বিঘ্নতা না ঘটিয়ে, সাধারণ মানুষের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সেই অনুরোধ রাখব।’
পিটার হাস কেবল ২৮ অক্টোবরের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক কিছু নিয়ে আলাপ করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা কিছু রোহিঙ্গাকে বিভিন্ন দেশে নিতে চান, আমাদের এসবি ক্লিয়ারেন্স দেরি হয়। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, এটা আমাদেরও মাথাব্যথা। অন্য দেশে যদি নিয়ে যায়, আমরা স্বাগত জানাই। এ জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা সে ব্যবস্থাটা করব। এছাড়া, পূজা নিয়ে আলাপ হয়েছে এবং সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় সচেষ্ট থাকবে রাস্তা-ঘাট যাতে অচল না হয়। ১০ লাখ লোক যদি বাইরে থেকে আসে; তারা যেটা প্রোগ্রাম নিয়েছে তাহলে কী হতে পারে, এমনিতেই যানজটের শহর আমাদের ঢাকা। সেখানে একটা তীব্র যানজট হতে পারে। বিভিন্ন সেবা নেওয়ার জন্য বা বিদেশে যাওয়ার জন্য যারা আসবে তারা বিভিন্ন অসুবিধার মুখে পড়বে। এটা আমাদের পুলিশ বাহিনী ধৈর্যের সঙ্গে দেখবে। যেখানে যা করা দরকার রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার করার জন্য তা তারা করবেন।’
খুলনা গেজেট/ টিএ