ঐশী তার আব্বুর ইচ্ছায় শিক্ষা জীবন শেষ করেন ডাবল মাস্টার্স করে। তিনি নিজের বাবা এবং শ্বশুরের ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। বাবা দিবস উপলক্ষে গত ২২ জুন নারীদের গ্রুপ ললনা’র রান্নাঘর-এ বাবাদের নিয়ে ঐশীর একান্ত নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে যেয়ে এতথ্য জানান।
লেখাটি ছিল হুবহু এরকম :
বাবা দিবস অথবা মা দিবস এর প্রতি আমার কোন রকম আগ্রহ কোন দিন ই ছিল না। কিন্তু বান্ধবীর গ্রুপ খুব আপন মনে হয়। তাই মনের কিছু কথা মাঝে মাঝেই এখানে বলে থাকি। আজ আমি Double Master’s করা একজন সুশিক্ষিত নাগরিক হতে পারছি উপরে মহান আল্লাহর ইচ্ছায়। আর এই পৃথিবীতে কোন মানুষ যদি আমার পাশে থেকে থাকেন, তারা হলেন আমার আব্বু আর বাবা।
BracU থেকে Regular M. B. A. করার মাঝেই আমার বিয়ে হয়ে যায়। তখন আমার আব্বু আমাকে বলেছিল, আল্লাহ যদি চান আর আামাকে বাঁচায় রাখেন, তাহলে তুমি অবশ্যই Double Master’s করতে পারবা। আর আমার বাবা খুব অসুস্থ ছিলেন। তার সাথে মাঝে মাঝেই গল্প করতাম। উনি একদিন আমাকে ডেকে বললেন, মা তোমার Result কেমন হচ্ছে। First class Mark থাকবে তো ? আমি বললাম, আলহামদুলিল্লাহ, বাবা। এখন পর্যন্ত আছে। দোয়া করবেন। উনি আামাকে বললেন, মা আমি মারা গেলেও কিন্তু পড়াশুনা বন্ধ করতে পারবা না। আমি চাই, আমার তিন মেয়ের মত তুমিও Master’s পাশ কর। তোমাকে কিন্তু First Class পেতেই হবে।
সেই দিন বুঝতে পেরেছিলাম যে বিয়ের পর আরও একজন বাবা পেয়েছি যা সবাই পায় না। উনি মারা গিয়েছিলেন আমার বিয়ের মাত্র ৭ মাস পর। এরপর আরও এক বছর পর আমার M.B.A. এর Convocation হয়। আলহামদুলিল্লাহ CGPA ছিল ৩.২৬। সে দিন আামার আব্বুর মুখে যে হাসি আমি দেখছি, আলহামদুলিল্লাহ কোনদিনই ভুলবো না সেই হাসি। পাশে আম্মু আর Life partner ও ছিল, তাদের কথা আজ নাই বা বলি। সে দিন ছিলাম আমি পৃথিবীর সব থেকে সুখী কিন্তু অসুখী মানুষ। কারন, সে দিন যে আমার বাবা মহান আল্লাহর কাছে ছিলেন। তাকে তো আমি বলতেই পারিনি যে, বাবা আমি আপনার কথা রাখতে পেরেছি।
পৃথিবীর সকল বাবা ভালো থাকুক, এই দোয়া ই করি।
বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সেখ আখতারুজ্জামানের একমাত্র কন্যা সেখ ঐশী বিনতে জামান (৩২) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার স্বামী ডাঃ শাহারিয়ার জামান খুলনা আই হাসপাতালের সহকারী পরিচালক।
এর আগে গত ৩০ জুন করোনা শনাক্ত হলেও কোন উপসর্গই ছিল না। ৪ জুলাই রাতে খুলনা করোনা হাসপাতালে ভর্তি হন ঐশী।
খুলনা গেজেট/এম.এম