চাঁদার টাকা না পেয়ে ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল কুমার সাহাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। এ মামলা করেছেন নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন, নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মৃত রামকৃষ্ণ সাহার ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু কুমার সাহা, একই গ্রামের মৃত জগবন্ধু সাহার ছেলে অমর কৃষ্ণ সাহা, অমরের ছেলে অনুপ কুমার সাহা, রবিন সাহার ছেলে রিপন সাহা ও ক্ষেত্রপালা গ্রামের ইসহাক বিশ্বাসের ছেলে জামিল হোসেন। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে বাঘারপাড়ার এসিল্যান্ডকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রেফাত রেহওয়ান সেতু।
মামলায় বলা হয়েছে, ১৫ বছর ধরে মেহেদী হাসান নারিকেলবাড়িয়া বাজারের কাপুড়িয়াপট্টির গলিতে সরকাররি জায়গায় ১৬ ফুট দৈর্ঘ ও ১১ ফুট প্রস্থের একটি সেমিপাকা টিনের ঘরে তনিমা গার্মেন্টস এন্ড বস্ত্রালয় নামে প্রতিষ্ঠান করে ব্যবসা করেন। ওই এলাকায় আরও অনেকেই একইভাবে প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত হয় ওইসব প্রতিষ্ঠান ডিসিআর প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করবেন। তারই অংশ হিসেবে বাঘারপাড়া ভূমি অফিস থেকে সার্ভেয়ার এসে তার ০.৫ শতক জমির ডিসিআর বাদীর নামে প্রদানের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এরমাঝে গত বছরের ২০ মে সকালে চেয়ারম্যান বাবুল সাহাসহ অন্য আসামিদের সাথে নিয়ে বাদী কাছে এসে বলে ডিসিআর নিজ নামে নিয়ে এখানে ব্যবসা করতে হলে চেয়ারম্যানকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় তার দোকান অন্য আসামি অমর ও অনুপের দখলে দিয়ে দেয়া হবে। এ কথায় বাধ্য হয়ে বাদী তাকে ৮৫ হাজার টাকা চাঁদা দেন। এরপর বাকি দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা প্রদান না করায় গত বছরের ১৯ জুন বাদীর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারই নির্দেশে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তার দোকান খুলে দেন।
২০ জানুয়ারি বেলা ১১ টায় চেয়ারম্যান বাবুলের নেতৃত্বে সকল আসামিসহ একদল সন্ত্রাসী বাদীর দোকানের তালা ও সার্টার ভেঙ্গে দোকানে প্রবেশ করে। এরপর তারা দোকান থেকে নগদ ৬৩ হাজার টাকা ও ২০ লাখ টাকার কাপড়সহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে। শুধুই তাই নয়, বাদীর দোকানের পেছনের দেয়াল ভেঙ্গে অমর ও অনুপের দোকানের সাথে যোগ করে দেয়।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ ও মামলা করতে যান বাদী। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো ধরণের সহযোগিতা না পেয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রেফাত রেহওয়ান সেতু বলেন, বাদীর অভিযোগ আদালত গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর মালামাল উদ্ধারসহ সার্বিক সহযোগিতায় এসিল্যান্ডের সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড