খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

বাগেরহাটের হোজির নদীর অবৈধ বাঁধ অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দখলে থাকা বাগেরহাটের হোজির নদীর অবৈধ বাঁধ ও নেট-পাটা অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলামের নেতৃত্বে হোজির ব্রীজের নিচের বাঁধ অপসারণ করা হয়। এসময়, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদাউস আনছারি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি, জেলা পুলিশের সদস্য, ডেমা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পর্যায়ক্রমে সকল নদী খালের বাঁধ ও নেটপাটা অপসারণ করা হবে। দীর্ঘদিন পরে নদীটি অবমুক্ত হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই নদীটিতে বাঁধ দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাছ চাষ করতেন। আমরা এই খাল থেকে একটা মাছও ধরে খেতে পারতাম না। গ্রামবাসীর প্রয়োজনে এই খালে পানি ওঠানো নামানো হত না। এই নদীর পানি ব্যবহার করা হত মাছচাষীদের সুবিধার্থে। সরকারিভাবে নদীটির বাঁধ অপসারণ হওয়ায় আমরা খুবই খুশি হয়েছি।

মোঃ আব্বাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, নদীর বাঁধ কাটায় আমাদের খুব ভাল হয়েছে। এখন নদী থেকে মাছ ধরতে পারব, নদীতে গোসল করতে পারব, নদীতে নৌকা চালাতে পারব। নিজেদের প্রয়োজনমত এই নদী ব্যবহার করতে পারব।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ আরজু বলেন, সরকারি নদী প্রশাসন অবৈধ দখলমুক্ত করেছে। এতে এলাকার মানুষের উপকার হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। উপজেলা প্রশাসন থেকে পাঁচ বছর আগেও একবার এই নদী দখলমুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বাঁধ কেটে দেওয়ার কিছুদিন পরে আবারও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু হয়, এটা দেখবে কে? পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে খনন কাজ শুরুর জন্য দেওয়া একাধিক বাঁধ এখনও এই নদীতে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখেছি হোজির নদীতে মাটির বাঁধ, পাটা ও নেট দিয়ে মাছচাষসহ সব ধরণের অবৈধ কাজ হচ্ছিল। আমরা হোজির ব্রিজের নিচে দেওয়া বাঁধটি অপসারণ করেছি। এই নদীর অন্যান্য স্থানে যেসব বাঁধ, নেটপাটা রয়েছে, সেগুলোও অপসারণের কাজ চলছে। এছাড়া ভবিষ্যতে কেউ যদি এই খালে অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করতে চায় তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার হুশিয়ারী দেন উপজেলার শীর্ষ এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ, ২০০৯ সাল থেকে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে অবস্থিত সাড়ে ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হোজির নদীর ৬ কিলোমিটারে বাঁধ দিয়ে সমন্বিতভাবে মাছ চাষ করতেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী। ৩০ জুন থেকে ৩ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন গনমাধ্যমে হোজির নদী দখল নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এরপরেই এই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে নামল প্রশাসন।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!