বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে তিন মাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহ অপহরণ ও হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আাদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৪৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম আসামিদের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন নিশান বাড়িয়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারের ছেলে হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২১), জসিম হাওলাদারের ছেলে মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২) এবং আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ফয়জুল ইসলাম (২৯)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ভোরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামে বাবা-মায়ের শোবার ঘর থেকে তিন মাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহকে চুরি করে দুর্বৃত্তরা। ওই দিনই শিশুটির বাবা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে চুরির সময় নেওয়া আব্দুল্লাহ এর বাবা সোহাগের মোবাইলে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। পরে আসামিদের চাওয়া অনুযায়ী সোহাগ ১০ লাখ টাকা দিলেও তারা শিশুটিকে ফেরত দেয়নি।
১৩ মার্চ হৃদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে হৃদয়ের কথিত মতে ১৭ মার্চ দুপুরে উপজেলার বিশারীঘাটা এলাকার একটি রাস্তার পাশে থাকা টয়েলেটের মধ্য থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে হৃদয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ৯ মার্চ আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তি তর্ক শেষে আদালত এই রায় দেন।
এই মামলার রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলী রণজিৎ কুমার মণ্ডল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় আসামিদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া দণ্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। আমরা এই রায়ে খুশি হয়েছি।
খুলনা গেজেট/এনএম