বাগেরহাটে জোয়ারের পানি বেড়ে প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে সম্পদের ক্ষতি হয়। ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকায় বাধঁ সংস্কারও করা হয়। তবে বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের লাগোয়া ভৈরব নদীর বাঁধের একটি অংশ ভেঙে ও জোয়ারে প্লাবিত হয়ে দুইশো পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। লোনাপানিতে নষ্ট হয়েছে ফসলের খেত, কাঁচাঘর, মাটির পথ। প্রায় ১৬ বছর ধরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও মেলেনি কোন প্রতিকার।
ওই পরিবারগুলোর দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে এসেছে জামায়াত ইসলামীর বাগেরহাট সদর উপজেলা শাখা। বুধবার ভোরে সদর উপজেলার ভৈরব নদীর পাশে বিষ্ণুপুর এলাকার গ্রামবাসীর সহযোগিতায় জামায়াতের বিভিন্ন পযায়ের দুই শতাধিক নেতাকর্মীরা বাধ নির্মাণ কাজ শুরু করে। দুপুর গড়িয়ে দৃশ্যমান হয়ে উঠে বাধের কাজ। এতেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
বিষ্ণুপুর গ্রামের বৃদ্ধ শিকদার আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, নদী ভাঙনে গ্রামরক্ষাবাঁধ বিলিন হয়ে গেছে বহু বছর আগে। এরপর প্রতিবছর বর্ষার মৌসুম জুড়ে জোয়ার-ভাটার পানির উপর নির্ভর করে চলতে হয় আমাদের। লোনা পানিতে বন্ধ হয়ে গেছে পানের বরাজ, মাছ চাষ, ফসলফলাদী। আমাদের দূর্ভোগ যেন দেখার কেউ নেই।
শেখ জিন্নাত হক বলেন, প্রায় দুই কিলোমিটার বাধ না থাকায় সামাজিক ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পুরো এলাকাবাসি। কেউ অসুস্থ হলেও পায় হেটেও নিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। কেউ মারা গেলে জানাজায় অংশ নিতে আসতে পারে না। অনেক সময় মেহমান আসে না বেড়াতে। আমাদের দূর্ভোগের সীমা নেই। তবে স্থায়ী বাধঁ নির্মানের জন্য সরকারের দাবী জানাচ্ছি।
জামায়াতে ইসলামীর বাগেরহাট সদর উপজেলা শাখার আমীর মাওলানা ফেরদৌস আলী বলেন, যাত্রাপুর ইউনিয়নের জামায়াতের নায়েবে আমীর হাফেজ আব্দুর রহমানের বাড়ি বিষ্ণুপুর গ্রামে। গত ২৬ মে মারা যাওয়ার পর রাস্তাঘাট না থাকায় তার জানাজায় অনেকেই অংশ নিতে পারেনি। তারপর থেকে আমরা উদ্যোগ নেই বাধঁ নির্মানের। বর্তমানে শুষ্কমৌসুম হওয়ায় বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া, বিষ্ণুপুর , ষাটগম্বুজ , বারুইপাড়া ও যাত্রাপুর ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী বাধ নির্মাণ কাজে অংশ নেয়। সেচ্ছাশ্রমে আমরা এই এলাকায় বাধঁ নির্মান করে দেওয়ায় ফসলি জমি ও জলোচ্ছ্বাসের ঘরবাড়ি প্লাবিতসহ নানা ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ