খুলনা, বাংলাদেশ | ১ মাঘ, ১৪৩১ | ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  রেস্তরাঁয় ধার্য করা নতুন ভ্যাট পুনর্বিবেচনার আশ্বাস এনবিআরের
  ২০১৮ সালের নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনার সুপারিশ : ইসি সংস্কার প্রধান

বাগেরহাটে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্ত প্রদান, খুশি রোগী ও স্বজনরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটে দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ ও প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দিনব্যাপি জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গ্লোবাল ইয়ুথ হারমোনি ইনিশিয়েটিভ ও ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের আয়োজনে এই রক্তদান ও সংগ্রহ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার ৪১ রক্ত দাতা সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। এ ধরণের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। কোন প্রকার হয়রানি ও টাকা পয়সা ছাড়া রক্ত পেয়ে ‍খুশি থ্যালাসেমিয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা।

থ্যালাসেমিয়া রোগী ৯ বছর বয়সী সীমার মা লাবনি বেগম বলেন, আমার দুটি বাচ্চা থ্যালাসেমিয়া রোগী। রক্ত দিতে দিতে একটি মারা গেছে। এখন একজন আছে, তাকে প্রতিমাসে রক্ত দেওয়া লাগে। প্রতিমাসে রক্তের ব্যবস্থা করা আসলে খুবই কষ্টকর। আমাদের ডেকে স্বেচ্ছায় রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, আমরা খুবই আনন্দিত।

আরেক মা নাসিমা বেগম বলেন, একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর মা-বাবাই জানেন যে রক্ত জোগার করা কত কষ্টের। গ্লোবাল ইয়ুথ হারমোনি ইনিশিয়েটিভ ও ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের এই আয়োজনে আমাদের খুবই উপকার হয়েছে।

শরণখোলা থেকে রক্ত দিতে আসা সাব্বির হোসেন বলেন, সকালে উঠে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে এখানে এসেছি। নিয়মিত রক্ত দিয়ে থাকি। তবে এটা একটু ব্যতিক্রম, থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্ত দিতে পেরে খুবই খুশি।

রক্তদাতা সংগঠন আলোর পথের সাধারণ সম্পাদক আবুবকর সিদ্দিক বলেন, বাগেরহাটের ৪১টি রক্তদাতা সংগঠনের ২ শতাধিক রক্তদাতা এখানে এসেছেন। বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে একটি দল আমাদের সহযোগিতা করছে। আজকে অর্ধশতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীকে আমরা রক্তদান করেছি। অবশিষ্ট যে রক্ত রয়েছে, সেগুলো বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে থাকবে, সেখান থেকে রোগীরা রক্ত গ্রহণ করতে পারবেন।

ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম, বাগেরহাটের সভাপতি বাবুল সরদার বলেন, আমরা চাই এই ধরনের আয়োজন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। প্রতিটি উপজেলায় ছোট করে হলেও, এমন আয়োজন থাকুক তাহলে একজন রোগীও রক্তের অভাবে মারা যাবে না। তাহলেই আমাদের এই উদ্যোগ সফল হবে। ভবিষ্যতেও এ ধরণের আয়োজন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।

বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রোগ থ্যালাসেমিয়া। এই রোগে আক্রান্তরা সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। সুস্থ থাকতে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের দুই সপ্তাহ থেকে চার সপ্তাহের মাঝে রক্ত দেওয়া লাগে। রোগী ও রোগীর স্বজনদের রক্ত জোগারের ভোগান্তি কমাতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। এছাড়া বাহকে বাহকে বিয়ে না করা, আত্মীয়দের মাঝে বিয়ে না করার অনুরোধ করেন তিনি। বাগেরহাটে বিভিন্ন বয়সী সহস্রাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছে। নিয়মিত রক্ত প্রতিস্থাপন ও নিয়ম মেনে চললে এরাও সুস্থ হতে পারে দাবি চিকিৎসকদের।

পরে রক্ত নিতে আসা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামানসহ আয়োজকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!