পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য নিরসন, অভিন্ন চাকরি বিধি ও চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। ৯ম দিনে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে সদর উপজেলার পোলঘাট এলাকার বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন।
তারা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে স্থায়ী নিয়োগ প্রদান, অভিন্ন চাকরি বিধি প্রদান ও বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে নানা স্লোগান দেয়। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ণ বোর্ডকে বয়কটের ঘোষণা দেন। যৌক্তিক এসব দাবি মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আন্দোলনকারীরা। যতদিন পর্যন্ত দাবি মেনে নেওয়া হবে না, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ণ বোর্ড কর্তৃক নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহেরও অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। যার ফলে গ্রাহক সেবা দিতে ভোগান্তিতে পরেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
এসময় বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম শহিদুল ইসলাম, এজিএম সিফাত উল্লাহ, পারভেজ আলম, মো. রিপন বিশ্বাস, আরিফুর রহমান, মিটার রিডার মো. আবুল হাসান, বিলিং সহকারী শারমিন কেয়াসহ প্রায় ৭শ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনে স্থায়ী অস্থায়ী ৪৫টি পদ রয়েছে। একই পদে স্থায়ী, অস্থায়ী ও দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করছেন অনেকে। যেমন লাইন ম্যা্ন পদে স্থায়ী, অস্থায়ী ও দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে অনেক কর্মচারী রয়েছে, আবার বিলিং সহকারী পদেও একই ধরণের কর্মচারী রয়েছে। এর ফলে কাজের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। কাজের উৎসাহও নষ্ট হয়। গ্রাহকদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একই ধরণের চাকুরী বিধিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানান এই কর্মকর্তা।
বিলিং সহকারী (কাজ নেই, মজুরী নেই) শারমিন কেয়া বলেন, পাশাপাশি টেবিলে বসে একই সময়ে একই ধরণের কাজ করি, কিন্তু কেউ কেউ আছেন যারা বেতনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা পায়। তবে আমরা কাজ না করলেও কোন বেতন তো পাই না। আবার চাকুরীর ক্ষেত্রে কোন সুবিধাও পাই না। অতিদ্রুত এসব বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান এই বিলিং সহকারী।
মিটার রিডার মো. আবুল হাসান বলেন, ৯ বছর পর পর আমাদের সমিতি পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু চাকুরী স্থায়ী হয় না, চাকুরীর কোন সুবিধাও আমরা ভোগ করতে পারি না। যতদিন পর্যন্ত এসব বৈষম্য নিরসন করে, সকল সুবিধা মেনে নেওয়া হবে না ততদিন পর্যন্ত রাজ পথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এই কর্মচারী।
এদিকে আন্দোলন ও কর্মবিরতির ফলে গ্রাহক সেবা কিছু বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানান বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, এই আন্দোলন ১ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে এই ৯ চলছে আন্দোলন ও কর্মবিরতির ফলে গ্রাহক সেবা কিছু বিঘ্নিত হচ্ছে। আমি চাই দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হোক সকলেই কাজে ফিরে আসুক।
খুলনা গেজেট/এএজে