বাগেরহাটে করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহনকারী ২২ হাজার নিবন্ধনকারীর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ে এসে টিকা দিতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিবন্ধনকারীরা। বুধবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল করোনা টিকা দান কেন্দ্রের দ্বিতীয় ডোজ শেষ হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বাগেরহাট জেলায় প্রথম ধাপে ৫৪ হাজার ৭‘শ ৮৪ জন নিবন্ধনকারী টিকা দিয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপে ৩২ হাজার নিবন্ধনকারী টিকা গ্রহণ করেছেন। এই হিসেবে এখনও ২২ হাজার টিকা গ্রহনকারী দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে সরকার থেকে পাওয়া পাওয়া দ্বিতীয় ডোজ শেষ হওয়ায় অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন নিবন্ধনকারীরা।
দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নব নির্মিত ১৫০ শয্যা ভবনের সামনে টিকা গ্রহণ প্রত্যাশীদের জটলা দেখা যায়। নির্ধারিত দিনে এসে টিকা দিতে না পেরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন অনেকে।
দুই বোন নিয়ে করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিতে আসা গ্রাম্য চিকিৎসক আলিমুজ্জামান বলেন, নিবন্ধন করে প্রথম ডোজ দিয়েছিলাম। আজকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার তারিখ ছিল। দুই বোনকে নিয়ে আসছি টিকা দিতে।টিকা শেষ আমাদের আগে জানাত, তাইলে আসতাম। এই রোদের মধ্যে এসে ফিরে যাওয়া যে কত কষ্টের তা কিভাবে বুঝাবো।
সায়ড়া গ্রাম থেকে টিকা নিতে আসা কে এম হুমায়ুন রেজা, ভারতী দাস, অসীত দাসসহ কয়েক জন বলেন, আজ আমাদের করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে এসে দেখি টিকাদান কক্ষে কেউ নেই। রেডক্রিসেন্টের একটা ছেলে দেখি সামনে দাঁড়ানো। তার কাছে জানতে পারলাম টিকা শেষ। টিকা দিবে না আমাদের আগে জানিয়ে দিতো। তাইলে আমরা আসতাম না। শুধু এরা নয় এরকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন আরও অনেকে। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় টিকা গ্রহণকারীরা এমন ভোগান্তিতে পড়েছে বলে দাবি করেছেন শহরের রিংকু পাল নামের এক নারী।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, করোনা টিকাদান কার্যক্রম শুরুর সাথে সাথে আমরা খুব আন্তরিকতার সাথে প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম শেষ করেছি। প্রথম ধাপে আমরা ৫৪ হাজার ৭‘শ ৮৪ জনকে টিকা দিয়েছি। দ্বীতিয় ধাপে আমরা ৩৬ হাজার ডোজ টিকা পেয়েছিলাম। এর মধ্যে প্রায় ৩২ হাজারের বেশি ডোজ টিকা প্রদান সম্পন্ন করেছি। আজকে সদর হাসপাতাল কেন্দ্রের টিকা শেষ হয়ে গেছে। আমরা টিকাদান কেন্দ্রের সামনে বড় ব্যানারে টিকা শেষ লিখে টানিয়ে দেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও টিকা শেষের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় টিকা দিতে না পারলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এই টিকা কিছুদিন পরেও নিলে কোন সমস্যা নেই। সরকার প্রদত্ত টিকা শেষ হওয়ায় আমি উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই আমরা নতুন কিছু ডোজ পাব। আশাকরি তখন অবশিষ্ট সবাইকে টিকা প্রদান করতে পারব।
খুলনা গেজেট/কেএম