প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ গতি বাড়িয়ে উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে। ইতমধ্যে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বাড়তে শুরু করেছে বাগেরহাট উপকূলে। সন্ধ্যার আগমুহুর্ত থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছে উপকূলবাসী। রেড ক্রিসেন্ট ও স্বেচ্ছাসেবকরা আশ্যয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা করছেণ। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অর্ধলক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌছেছে। কিছু গবাদি পশুকে ঝুকিপূর্ণ স্থান থেকে ৩ হাজার গবাদি পশু নিরাপদে নেওয়া হয়েছে।
রেমালকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সতর্ক করতে প্রচারণা করেছে কোস্টগার্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষেরদের। তবে সারাদিন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন কম গেলেও সন্ধ্যার দিকে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী বগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে আসা শামসুন্নাহার বেগম বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম ঝড় অন্য দিকে চলে যাবে এজন্য দিনের বেলায় আশ্রয় কেন্দ্রে আসিনি। যতই সময় বাড়ছে আবহাওয়া খারাপের দিকে যাচ্ছে। বাড়ির সব কিছু গোছগাছ করে রেখে সন্ধ্যার ভেতর আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছি।
সাউথখালী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া আব্দুল মালেক ফরাজী বলেন, শুনছি বন্যা আসতেছে পরিবারের সকলকে নিয়ে জীবন বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসছি। পরিস্থিতি যা দেখতেছি তাতে মনে হয় বাড়ি থাকলে ক্ষতির সম্মুখীন হব।
রায়েন্দা এলাকার আতিউর রহমান বলেন, এর আগে ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাই এবার ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত শোনার পর পরিবার এবং গবাদি পশু সাথে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছি। রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকবো।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় জেলায় মোট ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবকরা এলাকাবাসীকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগরের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি বৃদ্ধি করে উপকূলের একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। বিকাল তিনটায় মোংলা বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড়টির অবস্থান ছিলো। সন্ধ্যার পর ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় টি প্রবল বেগে উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।