খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনই জয়ের পথটা সহজ করে রেখেছিল বাংলাদেশ। আজ চতুর্থ দিন পৌঁছে গেল কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। দিনের দুই ঘণ্টা ১৪ মিনিটের মধ্যেই আফগানদের গুঁড়িয়ে দিয়ে টেস্টে নতুন ইতিহাস লিখল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে নেওয়া হয়ে গেল পুরোনো প্রতিশোধ। ব্যাটে-বলের দাপটে আফগানদের উড়িয়ে দিয়ে টেস্টে রানের হিসেবে সর্বোচ্চ জয়ের ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

আজ শনিবার (১৭ জুন) একমাত্র টেস্টের চতুর্থ দিন আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টে রানের হিসেবে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়। রানের হিসেবে আগের সর্বোচ্চ জয়টি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানের। সেটি ছিল ২০০৫ সালে।

শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়ের বিশ্বরেকর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানের জয়টি ইংল্যান্ডের, ৬৭৫ রানের। সেটাও ছিল ১৯২৮ সালে। এবার সেই তালিকায় তৃতীয়তে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে মেটানো হলো পুরোনো প্রতিশোধ। এই ফরম্যাটে প্রথম দেখায় আফগানিস্তানের কাছে ২২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ৪ বছর পর এবার সেই প্রতিশোধও ভালোভাবেই নিল লিটন দাসের দল।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের সামনে সমীকরণটা ছিল সহজ। জিততে হলো নিতে হতো আফগানিস্তানের ৮ উইকেট। এই লক্ষ্যে মাঠে নেমে দিনের শুরুতেই সাফল্য পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দিনের তৃতীয় ওভারেই আগের দিন উইকেটে থিতু হয়ে নাসির জামালকে থামান ইবাদত হোসেন। উইকেটে পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে থামেন জামাল।

এরপর আফসার জাজাইকে ফেরান শরিফুল। বাংলাদেশি পেসারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে খোঁচা মেরে বিপদে পড়েন জাজাই। মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ৬ রানে। শাহিদির কনকাশনে নামা বাহির শাহের প্রতিরোধও ভাঙেন শরিফুল। অভিষিক্ত বাহির শাহকে থামান ৭ রানে।

তবে বাকিরা ফিরলেও বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান রহমত শাহ। আগের দিন থিতু হয়ে যাওয়া রহমত আজও ছিলেন সাবলীল। শেষ পর্যন্ত আক্রমণে এসে রহমতের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ।

তাসকিনের করা অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট অফ লেংথ ডেলিভারি মোকাবিলায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রহমত। ৭৩ বল খেলে ৩০ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। উইকেটে নতুন আসা করিম জানাতও পারলেন না থিতু হতে। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের পিচ করা বলে এলোমেলো হয়ে যায় তাঁর স্টাম্প।

এরপর শুধু জয়ের অপেক্ষা। মাঝে লাঞ্চ বিরতিতে অপেক্ষা বাড়তে পারত বাংলাদেশের। কিন্তু সেই অপেক্ষায় ফেললেন না তাসকিন। দ্রুত শেষ উইকেটগুলো নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের পথ নিশ্চিত করেন। তবে শেষ দিকে তিনি পেতে পারতেন প্রথমবার পাঁচ উইকেটে স্বাদ। কিন্তু দুইবার আউট হয়েও হলেন না জাহির খান। একবার বাঁচলেন রিভিউতে, আরেকবার বাঁচলেন নো বলে। পরে অবশ্য তাসকিনের বলেই আহত হয়ে ফেরেন সাজঘরে।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ২৮ রান খরচায় শরিফুল নেন তিনটি উইকেট। ২২ রানে ইবাদতের শিকার একটি।

এর আগে এর আগে প্রথম ইনিংসে শান্তর সেঞ্চুরিতে ৩৮২ রান করেছিল বাংলাদেশ। ওই ইনিংসে শান্ত একাই করেছিলেন ১৪৬ রান। জবাবে প্রথম ইনিংসে নেমে ১৪৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। তাতে ২৩৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল বাংলাদেশ। লিডসহ বাংলাদেশের পুঁজি দাঁড়ায় ৬৬১। যা তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান থেমে গেল ১১৫ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৮৬ ওভারে ৩৮২

আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস : ৩৯ ওভারে ১৪৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৮০ ওভারে ৪২৫/৪ ডিক্লেয়ার (জয় ১৭, শান্ত ১২৪, জাকির ৭১, মুমিনুল ১২১*, লিটন ৬৬*, মুশফিক ৮ ; ইয়ামিন ১৩-১-৬১-০, মাসুদ ১২.৫-১-৮৩-০, হামজা ১৬.১-০-৯০-১, করিম ৮-০-৪৮-০, জাহির ২৩-০-১১২-২, শাহিদি ৩-০-১৯-০)।

আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৩ ওভারে ১১৫/৯ (জাদরান ০, মালিক ৫, রহমত ৩০, শাহিদি ১৩, জামাল ৬, জাজাই ৬, বাহির ৭, জানাত ১৮, হামজা ৫, ইয়ামিন ১, নিজাত ৪*, জাহির ৪ ; শরিফুল ১০-১-২৮-৩ ,তাসকিন ৯-২-৩৭-৪,তাইজুল ৫-২-২৯-০ , মিরাজ ৭-২-২২-১)।

ফল : ৫৪৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!