ঢাকার পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, তালেবানের সাথে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে কিছু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাবার পর সেখানে ধরা পড়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
আফগানিস্তানে তালেবান যেরকম দ্রুত গতিতে একের পর এক জায়গা দখল করে নিচ্ছে, তার আঁচ কিছুটা হলেও পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। ঢাকার পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যে এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যায়।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, তালেবানের হাতে রাজধানী কাবুলের পতন এখন শুধুই সময়ের ব্যাপার । এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষ এরই মধ্যে তালেবানের সাথে যোগ দিতে চলে গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, “আফগানিস্তানে যুদ্ধে যাবার জন্য একটি আহবান জানানো হয়েছে তালেবানদের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষ অলরেডি তালেবানদের সাথে যুদ্ধে যোগদান করার জন্য হিজরত করেছে। কিছু মানুষ আমরা ধারণা করছি যে ইন্ডিয়ায় ধরা পরেছে। আর কিছু পায়ে হেঁটে বিভিন্নভাবে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।” আফগানিস্তানে যাবার পথে কোন বাংলাদেশি ভারতে ধরা পড়েছে কিনা-সেটি ভারতের দিক থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের চেয়ারপার্সন মেজর জেনারেল (অব.) মুনিরুজ্জামান বলেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হবার কারণ আছে।
১৯৯০’র দশকে আফগানিস্তানে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাংলাদেশ থেকে অনেকে আফগানিস্তান গিয়েছিল। “যারা তখন আফগানিস্তানে গিয়েছিল, তারা সেখান থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের গোড়াপত্তন করে,” বলেন জেনারেল মুনিরুজ্জামান।
আফগানিস্তান এই অঞ্চলের দেশ হলেও বাংলাদেশের সাথে তাদের কোন সীমান্ত নেই। বাংলাদেশ থেকে কেউ অবৈধ পথে আফগানিস্তানে যেতে চাইলে তাকে ভারত ও পাকিস্তান পাড়ি দিতে হবে।
গত ১২ বছর যাবত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে যে জোরালো সহযোগিতা আছে – তাতে করে বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারত হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত যাওয়া তাদের জন্য কতটা সহজ হবে? জবাবে মি. মুনিরুজ্জামান বলেন, “ব্যাপারটা আপাতদৃষ্টিতে কঠিন মনে হলেও যারা এ ধরণের কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত – তাদের জন্য এটা বেশ সহজ। সিরিয়াতে যখন আইএস যুদ্ধ করছিল, তখনও বাংলাদেশ থেকে যোদ্ধাদের যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। কাজেই বাংলাদেশ থেকে আফগানিস্তানে যাওয়াটা অপেক্ষাকৃত সহজ।”
যদিও পুলিশ বলছে, বাংলাদেশের ভেতরে উগ্রপন্থীদের একটি অংশ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের এরই মধ্যে নানা অভিযানে আটক করা হয়েছে এবং কোন ধরণের হামলার ক্ষমতা তাদের সেই বলে পুলিশ দাবি করছে।
খুলনা গেজেট/কেএম