খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ
  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতায় শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযা‌পিত

কলকাতা প্রতি‌নি‌ধি

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন-এর ‘বাংলাদেশ গ্যালারীতে’-তে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর জীবনের উপর এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত ও আনন্দবাজার পত্রিকার মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রখ্যাত সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তাঁর ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সহকর্মী সুবীর হোম রায়। এ ছাড়া কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) মোঃ বশির উদ্দিন এবং দ্বিতীয় সচিব (কন্সুলার) রাসেল জমাদারও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি। আলোচনা সভায় মিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কলকাতার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের প্রতীক ছিলেন শেখ কামাল। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হলেও তাঁর মধ্যে কোন অহমিকাবোধ ছিল না। তিনি ছিলেন মার্জিত, বিনয়ী, বন্ধুবৎসল ও পরোপকারী।

প্রখ্যাত সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, শেখ কামাল একজন সৌম্য ও সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় তাঁর ছিল অবাধ বিচরণ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানির এডিসি ছিলেন। বসতেন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের অস্থায়ী কার্যালয় কলকাতার ৮, থিয়েটার রোডে বর্তমানে- যা শেক্সপিয়র সরণি। বাংলাদেশের চলমান মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য শেখ কামালের কাছে গেলে আলোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সখ্যতার কথা।

সুবীর হোম রায় স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল-এর মার্জিত, সদালাপী, শুদ্ধ সংস্কৃতির উজ্জ্বল পদচারণা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র শেখ কামাল ছিলেন ভাল ক্রিকেটার, উৎসাহী নাট্যকর্মী, সংগীত অনুরাগী ও উজ্জ্বল ছাত্র নেতা। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ছিলেন একজন মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ।

কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম তার আলোচনায় বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আতাউল গণি ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বলিষ্ঠ কর্মী এবং নিবেদিত প্রাণ। সংগ্রামী ও আদর্শবাদী সংগঠক হিসেবে ৬৬-এর স্বাধিকার আন্দোলন ও ৬৯-এর গণ আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭২ সালে তিনি আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠা করেন।

কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) মোঃ বশির উদ্দিন বক্তব্যে বলেন, শেখ কামাল ছিলেন মুক্তমনা, আজন্মচারী। বঙ্গবন্ধুর সন্তান হওয়ায় স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের নির্মমতা ও মিথ্যাচারের শিকার হন শেখ কামাল। তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি, ক্রীড়া ও সঙ্গীতাঙ্গনে অনেক আগেই নবযুগের সূচনা হত। এখনও প্রগতিশীল তরুণ সমাজের কাছে শেখ কামাল আদর্শের প্রতীক হয়ে আছেন।

দ্বিতীয় সচিব (কন্সুলার) রাসেল জমাদার বক্তব্যে বলেন, শেখ কামাল-এর জন্ম ও কর্মময় জীবন আমাদের কাছে অতুলনীয় কারণ সততার কষ্টি পাথরে তিনি ছিলেন অনন্য। শেখ কামাল ছিলেন উদ্দীপ্ত যৌবনের দূত ও পরোপকারী ব্যক্তিত্বের পুরোধা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে তিনি প্রথম শহিদ। শেখ কামাল-এর জন্ম আগস্ট মাসে, এই আগস্টেই তিনি পরিবারের সদস্যের সাথে শহিদ হন।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!