বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, গত একযুগেও কয়রার রাস্তাঘাটের কোনো সংস্কার হয়নি। কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ রক্ষায় এগিয়ে আসেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বরং বেড়িবাঁধ রক্ষার নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে কয়রায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে অবহেলিত কয়রা-পাইকগাছাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে। কয়রার এই অবহেলিত মানুষগুলোর আজকের আওয়ামী বিরোধী স্লোগান বলে দিচ্ছে এখান থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হবে ইনশাআল্লাহ। জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, দ্রব্যমুল্যের উর্দ্ধগতি, ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা বিএনপি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
পাইকগাছার সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল বলেন, শুধু বিএনপি নয়-সারাদেশ আজ সংকটে। সে কারণে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৬৮ হাজার গ্রামের মানুষ আজ জেগে উঠেছে। পালাবার পথ পাবেন না শেখ হাসিনা। আজকে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে আবোল-তাবোল কথা বলা শুরু করেছে। তারা বিদেশী প্রভূদের সহযোগিতায় ক্ষমতার মসনদে চিরস্থায়ী হতে চায়। পত্রিকার পাতায় দেখলাম- আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আগামী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। বিএনপির পূর্ব থেকেই বলে আসছে- এই অযোগ্য অথর্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ এই নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের অধিনস্ত সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তাই বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন ও অবিলম্বে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের মধ্যদিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাদ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী সরকারতে রাজপথে সংগ্রামের মাধ্যমে পতন নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠেলে সাজানো হবে, ওইসব আয়নাঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে দেশের মানুষের সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা দেয়া হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। সম্প্রতি রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি জবর দখল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। আওয়ামী লীগের হাতে দেশ, জাতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কিছুই নিরাপদ নয়।
আজ শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ডাঃ গাজী আব্দুল মজিদ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী ও যুগ্ম-আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবু।
পাইকগাছা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এসএম এনামুল হক ও পৌরসভা শাখার আহবায়ক এড. আব্দুস সাত্তারের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খান জুলফিকার আলি জুলু, মোস্তফা উল বারী লাভলু, মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজ, শেখ তৈয়েবুর রহমান, এসএম শামীম কবির, আশরাফুল আলম নান্নু, শামসুল আলম পিন্টু, এনামুল হক সজল, জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ আনিসুর রহমান, মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ডাবলু, মোঃ আরিফুর রহমান, মুর্শিদুর রহমান লিটন, নাজমুস সাকির পিন্টু, মোঃ রফিকুল ইসলাম বাবুু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদ, কৃষকদলের জেলা সভাপতি মোল্লা কবির হোসেন, জাসাস’র জেলার সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক খান ইসমাইল হোসেন, সেচ্ছাসেবক দল জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রুনু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তুহিন, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ প্রমুখ।
স্থানীয় আ’লীগের চরম অসৌজন্যমূলক ও অরাজনৈতিক আচরণ এবং পুলিশের অসহযোগিতার ফলে বারবার স্থান পরিবর্তন করা হলেও সকাল থেকেই মিছিল মিছিলে ভরে উঠে গদাইপুর ফুটবল ময়দান।
অন্যদিকে, কয়রা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুরূপভাবে বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কয়রা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এড. মোমরেজুল ইসলামের সভাপতিত্বে যুগ্ম-আহবায়ক নূরুল আমীন বাবুলের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন জেলা-উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কয়রার কালনা আমিনিয়া ফাজিল মাদরাসা ময়দানেও বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই