সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন। ১৩৯ জন ভোটারের ভোটে চূড়ান্ত হবে সভাপতিসহ ২১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি, যাদের হাতে আগামী চার বছর থাকবে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব। এই নির্বাচনে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে শেখ মোহাম্মদ আসলামের নেতৃত্বাধীন সমন্বয় পরিষদ। আর সভাপতি পদে সালাউদ্দিনের বিপক্ষে লড়বেন শফিকুল ইসলাম মানিক।
সম্মিলিত পরিষদের ব্যানারে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে ২১টি পদে মনোনয়নপত্র তুলেছেন সালাউদ্দিন। বরাবরের মতো এই পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি পদে রয়েছেন আবদুস সালাম মুর্শেদী। একই পদে লড়বেন তিনবারের সহসভাপতি ও আবাহনী লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কাজী নাবিল আহমেদ।
সহসভাপতির বাকি তিন পদে প্রথমবারের মতো মনোনয়নপত্র তুলেছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান, তমা কনস্ট্রাকশনের কর্ণধার আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বাবু। এ ছাড়া সদস্য পদে আছেন আরো ১৫ জন। সব মিলিয়ে ২১ জনের সম্মিলিত পরিষদ।
গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৬ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে সম্মিলিত পরিষদ। ইশতেহারে আগামী চার বছরে ফুটবলের উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেছে এই পরিষদ। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় ফুটবল দল, ঘরোয়া ফুটবল, মহিলা ফুটবল, উন্নয়ন প্রকল্প ও বিভিন্ন টেকনিক্যাল দিকগুলোর উন্নয়ন। আছে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে ১৫০-এর ভেতরে নেওয়ার পরিকল্পনা। বিগত ১২ বছরে নিজেদের সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরেছেন তাঁরা।
অন্যদিকে সম্মিলিত পরিষদের বিপরীতে ১৯ জনের দল নিয়ে লড়বে সমন্বয় পরিষদ। যার নেতৃত্বে আছেন সিনিয়র সহসভাপতি পদে লড়াই করতে যাওয়া শেখ মোহাম্মদ আসলাম। নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে তারা। সমন্বয় পরিষদের এই ইশতেহারে আছে ফুটবলে ১২ বছর মেয়াদি দীর্ঘ পরিকল্পনা। জেলা ও উপজেলায় লিগ, বয়সভিত্তিক ফুটবল, সোহরাওয়ার্দী ও শেরেবাংলা কাপ নিয়মিত আয়োজন করা। আর পেশাদার ফুটবল লিগকে ঢেলে সাজানো পরিকল্পনা তাদের।
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদের হয়ে নির্বাচনে লড়াই করছে। সম্মিলিত পরিষদ ২১ পদের সবকটিতে প্রার্থী দিলেও সমন্বয় পরিষদ সভাপতি ও একটি সহসভাপতি বাদে ১৯টি পদে লড়বে।
দুটি পরিষদেরই লক্ষ্য বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়া। কিন্তু, ভোটের মঞ্চে এগিয়ে আছে সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে থাকা সম্মিলিত পরিষদ। তিনবারের অভিজ্ঞতার সঙ্গে হেভিওয়েট প্রার্থী—তাদের বিপক্ষে সমন্বয় পরিষদের সফলতা আসে কি না, সেটাই দেখার।
সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল : সভাপতি : কাজী মো. সালাউদ্দিন।
সিনিয়র সহসভাপতি : আবদুস সালাম মুর্শেদী।
সহসভাপতি: ইমরুল হাসান, কাজী নাবিল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম বাবু ও আতাউর রহমান মানিক।
সদস্য : হারুনুর রশিদ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইলিয়াছ হোসেন, বিজন বড়ুয়া, অমিত খান শুভ্র, ইকবাল হোসেন, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, মো. জাকির হোসেন, মাহফুজা আক্তার কিরণ, আসাদুজ্জামান মিঠু, কামরুল হাসান হিলটন, সৈয়দ রিয়াজুল করিম, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ও নুরুল ইসলাম নুরু।
সমন্বয় পরিষদের প্যানেল :
সিনিয়র সহ-সভাপতি : শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
সহসভাপতি : মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, এস এম আবদুল¬াহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান ও শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান।
সদস্য : ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ফজলুর রহমান বাবুল, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, শাকিল মাহমুদ চৌধুরী, আরিফ হোসেন মুন, আমের খান, সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, মোহাম্মদ সাব্বির হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, টিপু সুলতান, আ ন ম আমিনুল হক মামুন, মঞ্জুরুল আহসান, মহিদুর রহমান মিরাজ ও মিজানুর রহমান মিজান (সদস্য)।
খুলনা গেজেট/এএমআর