চোখের সামনেই ঘরটিতে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, নিমেষেই সব পুড়ে ছাই হয়েছে। এক কাপড়ে অন্যের বাড়িতে ৩দিন ধরে রাত্রিযাপন। কিভাবে কলেজে পাঠাবো মেয়েকে? কথাগুলো বলছিলেন, মোরেলগঞ্জে পঞ্চকরণ গ্রামের নিঃস্ব হয়ে পড়া দিনমজুর পরিবারের গৃহীনি আসমা সুলতানা।
গত শুক্রবার বিকেলে দিনমজুর শ্রমিক মো. দুলাল হোসেন খানের বসতঘরটি অগ্নিকান্ডে সম্পূন্ন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ফ্রীজ, টিভি, বিভিন্ন আসবাবপত্র মালামাল পুড়ে ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। বর্তমানে ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদকর্মীদের সামনে হাউমাউ করে অঝরে কেঁদে গৃহীনি আসমা সুলতানা আরও বলেন, স্বামী ফেনী শহরে দিনমজুর, ফল বিক্রি করে কোনমতে সংসার চলতো। কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মনিকা আফরোজ, ছেলে স্কুল পড়ুয়া কাইয়ুম খান ঘটনার সময় ৩ জনই বাড়িতে ছিলাম না।
শুক্রবার বিকেল ৫ টার দিকে বাড়িতে এসে দেখি বসতঘরটি আগুনে জ্বলছে। স্থানীয় লোকজন পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে। ততক্ষনে ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরটি এখন পোড়া কাটে দাড়িয়ে আছে।
কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী মনিকা আফরোজ বলেন, কিভাবে কলেজে যাব, বই, খাতা পুড়ে গেছে। এক জামা-কাপড় পড়ে আছি আজ ৩দিন। খাবার খাচ্ছি ও থাকছি অন্যের বাড়িতে।
দিনমজুর মো. দুলাল হোসেন খান বলেন, ভোট দিতে বাড়িতে আসার পথিমধ্যে ফোনে জানতে পারি বসতঘরটিতে আগুন লেগেছে। ধারনা করা হচ্ছে পানি ফুটানোর কয়েল পুড়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে গ্যাস সিলিন্ডারবিস্ফোরণ হয়ে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তিনি সরকারিভাবে প্রশাসনের প্রতি মানবিক সহায়তার দাবি জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার ও ইউপি সদস্য ডা. আব্দুস ছোবাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, পরিবারটি খুবই গরিব, কষ্ট করে সংসারে যা গুছিয়ে ছিল তাসব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যান কিছুটা আর্থিক সহায়তা করেছেন।
এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বলেন, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর পরিবারের বিষয়টি শুনেছি। তাদেরকে আবেদনের জন্য বলা হয়েছে। ওই পরিবারটিকে মানবিক আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে